নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিভিন্ন রাজ্যের চাপে নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে হল কেন্দ্রকে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বর্ধিত বেতনের বকেয়া মেটানোর সঙ্গে অবসরের বয়সের সম্পর্ক না রাখতে অবশেষে রাজি হতে হল কেন্দ্রীয় সরকারকে। বকেয়া প্রায় আট হাজার কোটি টাকা তিনটি কিস্তিতে রাজ্যগুলিকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। এর ফলে গোটা দেশে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় চার লক্ষ শিক্ষক উপকৃত হবেন। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইউজিসি-র চাঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, ২০০৬-এর ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বর্ধিত হারে বেতন পাওয়ার কথা। বর্ধিত বেতনের ৮০ শতাংশ দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় সরকারের, বাকিটা রাজ্যের। কিন্তু মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক শর্ত দেয়, রাজ্যগুলি শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৬৫ বছর করলে তবেই এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তা পাবে। উল্টো দিকে, রাজ্যগুলির যুক্তি ছিল, চাঢা কমিটির সুপারিশে বর্ধিত বেতনের সঙ্গে অবসরের বয়সকে যুক্ত করা হয়নি। তাই কেন্দ্রীয় সরকারেরও এই শর্তের পিছনে কোনও যুক্তি নেই। দু’তরফের চাপানউতোরে ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সাহায্য থেকে বঞ্চিত থাকে অধিকাংশ রাজ্য।
আজ মন্ত্রিসভায় এই সংক্রান্ত যে প্রস্তাবটি আনা হয়, তাতে বলা হয়, এই ক্ষেত্রে অবসরের বয়সসীমা সংক্রান্ত শর্ত মানার বাধ্যবাধকতা থাকছে না। ওই শর্ত না মানলেও বকেয়া অর্থ পাবে রাজ্যগুলি।
আসলে বিষয়টি নিয়ে যে ভাবে শুধু অ-কংগ্রেসি রাজ্যগুলিই নয়, রাজস্থান-হরিয়ানার মতো কংগ্রেসি রাজ্যগুলিও আপত্তি জানাচ্ছিল তাতেই নড়েচড়ে বসতে হয় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে। হিমাচলপ্রদেশ ও রাজস্থানের বক্তব্য ছিল, এর ফলে নতুনদের সুযোগ কমে যাবে। অবসরের বয়স বাড়িয়ে পঁয়ষট্টি করলে যোগ্য তরুণের আরও অপেক্ষা করে থাকতে হবে।
এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপের সামিল বলে সরব হয় পশ্চিমবঙ্গ, কেরলের মতো রাজ্যগুলি। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলি আবার জানায়, কলেজ অন্য বাকি সরকারি কমর্চারীরাও ওই সুবিধা চাইবেন। দেশের অধিকাংশ বড় রাজ্যের কাছ থেকে আপত্তি আসায় নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটতে বাধ্য হলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী কপিল সিব্বল। |