কখনও ঠাকুরের ছবির সামনে, কখনও বা টিভির সামনে। সারাদিনটা এ ভাবে কেটেছে দেশের ভাবী রাষ্ট্রপতির দাদা-দিদি পীযূষ মুখোপাধ্যায় এবং অন্নপূর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বীরভূমের কীর্ণাহার লাগোয়া পরোটা গ্রামে দিদি অন্নপূর্ণাদেবী আত্মীয়, পড়শিদের নিয়ে টিভির সামনে বসেছিলেন। তিনি বলেন, “দেশের প্রধান হওয়ার স্বপ্ন ছিল ভাইয়ের। আমি জানতাম ও একদিন তা হবেই। ঠাকুরের আশীর্বাদি ফুল নিয়ে ওর কাছে যাব।”
একই চিত্র দেখা গিয়েছে বোলপুরে দাদা পীযূষবাবুর বাড়িতেও। পীযূষবাবু বলেন, “জানতাম প্রণব রাষ্ট্রপতি হবেই। কিন্তু মনে ক্ষেদ ছিল। রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে দেশের প্রথম বাঙালি হলেও কিছু বাঙালির সমর্থন পাচ্ছিল না। |
কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ক্ষেদ মিটিয়ে দিয়েছিলেন। ওকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি যাঁরা প্রণবকে সমর্থন করেছেন তাঁদেরও ধন্যবাদ।” স্মৃতি হাতড়ে তিনি বলেন, “ছ’য়ের দশক থেকে কর্মসূত্রে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হলেও আসলে আমরা একান্নবর্তী পরিবারের মতোই। তাই ভাইয়ের রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ায় অবশ্যই খুশি হয়েছি। তিন দিন আগে ফোনে তার দায়িত্ব নেওয়ার দিনটিতে দিল্লি যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলাম। কিন্তু ভাই জানিয়েছে, ‘তাড়াহুড়োর মধ্যে তোমার শরীর হয়তো ধকল নিতে পারবে না। তা ছাড়া, এক দিন তো তুমিই রাষ্ট্রপতি ভবনে আসবে।” তবে এ বার থেকে তাঁকে আর একটি দায়িত্বে পালন করতে হবে না বলে মন্তব্য করেন পীযূষবাবু। কোনও নির্বাচনে প্রণববাবু প্রার্থী হলে প্রচারে নামতে হয়েছে দাদাকে। এ বার থেকে প্রণববাবু রাজনীতির ঊর্ধ্বে চলে যাওয়ায় দাদাকে সেই দায়িত্ব সামলাতে হবে না। |
শুধু পারিবারিক গণ্ডিতে থমকে নেই এই আবেগ। এ দিন ভোট পর্ব শুরু হতেই কীর্ণাহার লাগোয়া জুবুটিয়া যপেশ্বর মন্দিরে হোমযজ্ঞ শুরু হয়। ওই মন্দিরের অন্যতম কর্মকর্তা জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “ভোটপর্ব শেষ হওয়া পর্যন্ত যজ্ঞ হয়েছে।” আবেগের ছোঁয়া লেগেছে প্রণববাবুর গ্রাম মিরাটিতেও। গ্রামের বোলান সম্প্রদায় গান বেঁধেছেন প্রণববাবুকে নিয়ে। গ্রামের ক্লাব মিরাটি কিশোরবাহিনীর সামনে বসেছিল গানের আসর। প্রসঙ্গত, ওই ক্লাবের প্রতিষ্ঠা ও সভাপতি প্রণববাবু। গ্রামবাসী গুণধর সাহা, জ্যোৎন্সা কোনাইদের কথায়, “রাষ্ট্রপ্রধানের গ্রাম হিসেবে আমরা গর্বিত।” |