মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক-চিকিৎসক বিক্রম সাহার অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলায় আগাম জামিনের জন্য আবেদনকারী ৫ চিকিৎসক নিজেরাই আগে এক দফা শুনানি পিছনোর আর্জি জানিয়েছিলেন। বুধবারও তাঁরা আবেদন নিয়ে এগোতে চাইলেন না। এ দিন মেদিনীপুর জেলা ও দায়রা আদালতে ওই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। তার আগে আবেদনকারীদের আইনজীবী ক্ষিতীশ পলমল বলেন, “শুনানির জন্য বেশ কিছু নথিপত্র প্রয়োজন। ইতিমধ্যে সে-সব নথিপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তবে তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পাওয়া না-ও যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আপাতত আবেদন নিয়ে এগোনো হচ্ছে না।”
বিক্রম সাহার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার ও ৬ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হুমকি-প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর স্ত্রী শালিনীদেবী। অভিযুক্ত ৬ চিকিৎসকের মধ্যে অনুপ রায় এখন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ। বাকি ৫ জন মেদিনীপুর শহরেই থাকেন। তাঁদের মধ্যে অশোক মাইতি, আশিস হাজরা, মৃণাল বর্মন, অরুণ আচার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই কর্মরত। দেবাশিস মজুমদার আগে মেদিনীপুর মেডিক্যালেই কর্মরত ছিলেন। কয়েক মাস আগে স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন।
শালিনীদেবীর অভিযোগ পেয়ে প্রথমে তদন্ত শুরু করেছিল মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। পরে তদন্তভার নেয় সিআইডি। রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়ে। তৃণমূলের একাংশ সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপকবাবুকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশের কাছে স্মারকলিপিও দেয়। অন্য দিকে, অভিযোগ দায়েরের সঙ্গে সঙ্গেই মেদিনীপুর শহরের ৫ চিকিৎসক আত্মগোপন করেন। কয়েক দিন পরেই অবশ্য তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন। গত ২০ জুন তাঁরা মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতেই গত ১০ জুলাই প্রথম শুনানির দিন ধার্য হয়। সে দিন আবেদনকারীদের তরফেই শুনানির দিন পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। বুধবার শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছিল। এ দিন আগাম জামিনের আর্জি নিয়ে না-এগোনোর কথা জানান ৫ চিকিৎসকের আইনজীবীরা। জানা গিয়েছে, তথ্য-জানার অধিকার আইনে কিছু নথিপত্র হাতে পেতে চাইছেন ওই আইনজীবীরা। তার পরে ফের আগাম জামিনের আর্জি জানানো হতে পারে। |