মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৭২ ঘন্টায় ১১টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বেশ কিছুদিন পরে ফের শিশু মৃত্যু শুরু হওয়ায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের পরিবারের লোকেদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল থেকে শুরু করে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও সুপার, তিনজনই জেলার বাইরে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন হালদার বলেন, “স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কলকাতায় এসেছি। শিশু মৃত্যুর খবর বলতে পারব না।” সুপার হিমাদ্রি আড়ি বলেন, “বিশেষ কাজে জেলার বাইরে আছি।” ভর্তি সংক্রান্ত কাউন্সেলিংয়ে মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যালও কলকাতায়। শিশু মৃত্যুর ব্যাপারে জেলাশাসক শ্রীমতী অর্চনা বলেন, কম ওজন ও শ্বাসকষ্ট জনিত অসুখে ওই শিশুগুলি মারা গিয়েছে। যে শিশুগুলি মারা গিয়েছে তাদের চিকিৎসায় গাফিলতি নেই। মেডিক্যাল কলেজে যখন শিশুদের ভর্তি করা হয় তখনই অবস্থা খারাপ ছিল। একটি শিশুকে তো মৃত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছিল। শিশু মৃত্যু আর যাতে না বৃদ্ধি পায় সেব্যাপারে নজর রাখা হচ্ছে।” এ দিকে মেডিক্যাল কলেজে শিশু মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কমার্ধ্যক্ষ সফিজুদ্দিন আহমেদ বলেন, “মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক থেকে নার্স ,সাফাই কর্মী সবই কম। লিখিত ভাবে চিকিৎসক, নার্স ও সাফাই কর্মী নিয়োগ করার জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে অনুরোধ করা হয়েছিল। এখনও চিকিৎসক বা নার্স কিছুই পাইনি। চিকিৎসকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।” মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালে তিনটি শিশু মারা গিয়েছে। মানিকচকের গোপালপুরের ইয়াসমিন বেগমের ৩ দিন বয়সী শিশু পুত্রের আজ সকালে মৃত্যু হয়েছে। ইয়াসমিন বেগমের স্বামী মোশারফ নবি বলেন, “রবিবার সকাল ৯ টা মানিকচক হাসপাতালে শিশু পুত্র হয়। দুপরে ডাক্তারবাবু ছেলেকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করাতে বলেন। বিকেলেই ছেলেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করি। ভর্তি করার পর একবার মাত্র ডাক্তারবাবু আমার ছেলেকে দেখতে এসেছিলেন। ছেলে কেমন আছে সেটাও কেউ জানায়নি। আজ সকালে ছেলে মারা যায়। বীনা মন্ডলের এক দিনের শিশুপুত্র আজ মারা গিয়েছে। আনসারা বিবির এক দিনের শিশু পুত্রকে এসএনসিইউতে ভর্তি করেও বাঁচানো যায়নি। এদিন সকালে শিশু মারা যায়। সোমবার ও মঙ্গলবার ৮টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের তরফে বলা হয়েছে, শিশুমৃত্যু নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই। যে ১১টি শিশু মারা গিয়েছে তাদের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তাদের বাঁচানো সম্ভব ছিল না। |