সিকিমের পাহাড়ি এলাকা এবং সমতলে গত দেড় মাস ধরে ভারী বৃষ্টিপাত চললেও ব্যক্তিক্রম দার্জিলিং। গত মাত্র দেড় মাসে উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় যেখানে বছরের গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ছুঁয়ে গিয়েছে সেখানে আবহাওয়া দফতরের হিসেবে, দার্জিলিং এবং কালিম্পং এলাকায় এ বার বৃষ্টির ঘাটতি বেড়ে চলেছে। কালিম্পংয়ের কাছাকাছি পেডং এলাকায় অবশ্য চলতি বছরের অতিবৃষ্টির প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। জুন মাসের শুরু থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত দার্জিলিঙে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় ৪০ শতাংশ এবং কালিম্পঙে ১০ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিকিমের গ্যাংটকে বর্ষার প্রথম দেড় মাসে ১৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এ বার অতিবর্ষণে পাহাড়কে ছাপিয়েছে সমতল। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে বর্ষার চার মাসে স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২ হাজার ৫৮৮ মিলিমিটার। অথচ চলতি বছরের জুন থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত ২ হাজার ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ বছরের ৭৮ শতাংশ বৃষ্টি দেড় মাসে হয়েছে। বানারহাটে যেখানে বর্ষায় প্রায় ৪ হাজার ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়, সেখানে বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৮৮ মিলিমিটার। বুধবার পর্যন্ত গত দেড় মাসে শিলিগুড়িতে স্বাভাবিকের থেকে ১২ শতাংশ, জলপাইগুড়িতে ২১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “দার্জিলিং ও কালিম্পং ছাড়া সিকিম ও উত্তরবঙ্গের সর্বত্র ভারী বর্ষণ হয়েছে। এমনকী কালিম্পংয়ের কাছাকাছি পেডংয়েও প্রায় ৪১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সিকিম ও উত্তরবঙ্গের উপরে মৌসুমী অক্ষরেখার অবস্থান হওয়ায় চলতি বছরে বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘন্টাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।” সিকিমে অতিবৃষ্টির ফলে তিস্তা-সহ বেশ কিছু পাহাড়ি নদীতে জলস্তর বেড়েছে। দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টির ঘাটতি থাকলেও চলতি সপ্তাহের শুরুতে সিকিমের মতো দার্জিলিং পাহাড়েও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে ডুয়ার্স ও সমতলের বেশ কিছু নদীর জলস্তর বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলে। গত সোমবার পর্যন্ত তিস্তা, রায়ডাকের মতো নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়েছে। সেই সঙ্গে সমতলেও বৃষ্টির জন্য ডুয়ার্স জুড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। |