সাপের ভয় পূর্ত দফতরে
নিজের অফিসে বসে কাজ করছিলেন বড়বাবু অভিজিৎ কর্মকার। মাথার পিছনে জানালায় ‘ফণা’ তুলে দাঁড়িয়েছিল একটি ‘গোখরো’। সহকর্মীর ‘সাপ সাপ’ চিৎকারে চেয়ার ছেড়ে ঝাঁপিয়ে দরজার সামনে চলে যান তিনি। ‘গোখরো’টি জানালা থেকে নেমে জঙ্গলে চলে যায়। কাজের চাপে সকাল সকাল তাড়াহুড়ো করে অফিসে ঢুকছিলেন হারাধন পাল। তার সামনে পড়ে যায় একটি ‘গোখরো’। লাফিয়ে কয়েক গজ পিছিয়ে অফিসের বাইরে চলে যান হারাধনবাবু। শুধু ওই দু’টি নয়, প্রায় প্রতিদিন কখনও জানালায়, কখনও আলমারির নিচে, কখনও সিঁড়িতে শুয়ে থাকে গোখরেরা। শিলিগুড়ির তিনবাতি মোড়ের পূর্ত দফতরের হাইওয়ের সমীক্ষা বিভাগের অফিসে ‘গোখরো’র আতঙ্কে দিন কাটছে কর্মীদের। ওই অফিসের সহকারি বাস্তুকার শিশির কুমার দেব বলেন, “প্রাণ হাতে নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। বহুদিন আমি নিজে সাপের সামনে পড়েছি। একদিন আলমারির নিচেও সাপ দেখেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। পাশে একটি নতুন ভবন হয়েছে । সেখানে আমাদের নিয়ে যাওয়া হবে বলে শুনেছি।” পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে শিলিগুড়ি শহরের ভাড়া বাড়ি থেকে পূর্ত দফতরের একটি বাংলোয় হাইওয়ে সমীক্ষা বিভাগের অফিসটি নিয়ে যাওয়া হয়। তার আগে সেখানে ওই দফতরেরই একজন মুখ্য নির্বাহী বাস্তুকার থাকতেন। তিনিও সাপের ভয়ে ওই বাংলো ছেড়ে দেন বলে কর্মীরা জানান। বর্তমানে সেখানে ৪১ জন কর্মচারী রয়েছেন। এ ছাড়াও একজন নির্বাহী বাস্তুকার, দু’জন সহকার বাস্তুকারও রয়েছেন। অফিসের চারদিকে আগাছায় ভরে গিয়েছে। অফিসে ঢোকার মুখেই বড় বড় ঘাস, বেশ কিছু ছোট ছোট গাছ দিয়ে জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। জঙ্গলের ভেতরে বেশ কিছু পিচের ড্রাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অফিসের পেছনের দিকেও একই হাল। সর্বত্র আগাছা। একটি পরিত্যক্ত ঘরও রয়েছে। কর্মীদের অভিযোগ, ওই পরিত্যক্ত ঘর এবং আগাছার জঙ্গলে সাপেদের আড্ডা রয়েছে। সেখান থেকেই সাপ অফিসের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। বিশেষ করে সকালের দিকে সিঁড়ি সহ অফিসের বিভিন্ন জায়গায় তারা ঘুরে বেড়ায়। সম্প্রতি অফিসের সামনে থেকে একটি গোখরো ধরে নিয়ে বন দফতরের হাতে তুলে দেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। গোখরো ছাড়াও সেখানে ‘দাঁড়াশ’ সাপও দেখা গিয়েছে বলে তাঁরা দাবি করেন। অভিজিৎবাবু বলেন, “সব সময় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হয়। মানসিক ভাবে ঠিক থাকতে পারছি না। কাজের উপরেও তার প্রভাব পড়ছে। এই পরিস্থিতি পাল্টানো প্রয়োজন। এভাবে চলতে থাকলে একদিন যে কোনও অঘটন ঘটতে পারে।” হারাধনবাবু জানান, একদিন নয়, তিনি কয়েকদিন সাপের সামনে পড়েছেন। কর্মীরা জানান, মাঝে তাঁরা কার্বলিক অ্যাসিড নিয়ে অফিস ঘর এবং আশেপাশে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। অফিসের আরেক সহকারি ইঞ্জিনিয়ার নীতিশ বসাক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এই পরিস্থিতি চলছে। সবসময় আশেপাশে চোখ রাখতে হয়।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.