সৌজন্যে হিন্দি বর্ণমালা, পূর্ণর পিছনে প্রণব
প্রতিদ্বন্দ্বী পূণর্র্ সাংমাকে হারিয়ে তাঁর রাষ্ট্রপতি হওয়া প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু ব্যালটের নাম-তালিকায় সেই সাংমার কাছে পিছিয়ে ‘হবু রাষ্ট্রপতি’ প্রণব মুখোপাধ্যায়!
আজ, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে রাজ্য বিধানসভার নমুনা ব্যালটে তো তেমনই দেখা গেল।
দুই প্রতিদ্বন্দ্বীরই নামের আদ্যক্ষর ‘প’। ইংরেজিতে ‘P’। কিন্তু তা হলে এই আগুপিছু কেন? বুধবার ভোটপ্রক্রিয়া ঝালিয়ে নিতে গিয়ে ভোটাররা ভাবছিলেন! ভাবছিলেন, ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী তো ‘পূর্ণ’ নামে ‘P’-এর পরে দ্বিতীয় অক্ষর ‘U’। প্রণবে ‘P’-র পরে ‘R’। তাতেও তো প্রণববাবুরই নাম আগে আসা উচিত!
কারণটা কী?
ব্যাখ্যা করেছেন বিধানসভার সচিব যাদবলাল চক্রবর্তী, “রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ভোট দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় রাষ্ট্রভাষা হিন্দির বর্ণমালা ধরেই প্রার্থীদের নামের তালিকা ঠিক হয়। ঠিক যেমন এ রাজ্যে রাজ্যসভা নির্বাচনের সময় ব্যালটে বাংলা বর্ণমালার ক্রম অনুসরণ করা হয়। পূর্ণ-প্রণব দু’টো নামেরই আদ্যক্ষর এক হওয়ায় দ্বিতীয় অক্ষরের নিরিখে পূর্ণর ‘পূ’ (প-এর যুক্তবর্ণ ‘ঊ’) প্রণবের ‘প্র’ (প-এর যুক্তবর্ণ র) থেকে এগিয়ে গিয়েছে।”
নমুনা ব্যালটে দুই প্রার্থীরই নাম লেখা দেবনাগরী ও ইংরেজি হরফে। উপরে দেবনাগরী হরফ। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও প্রণববাবুর নামের পাশে কী ভাবে ‘১’ লিখতে হবে, তা নিয়ে দিনভর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেই মহড়া চলেছে। রাষ্ট্রপতি ভোটে পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে ‘১’ লেখাটাই নিয়ম। কোনওভাবে যাতে একটি ভোটও নষ্ট না হয়, তা বোঝানো হয়েছে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল ভোটারদের। বিধানসভার নৌসর আলি কক্ষে নমুনা ব্যালটে তৃণমূলের বিধায়করা ভোটপ্রক্রিয়া ঝালিয়ে নিয়েছেন। তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে দলের সব বিধায়ক-সাংসদ বিধানসভাতেই ভোট দেবেন। এবং তাঁদের ভোট দিতে হবে বিধানসভা থেকে সরবরাহ-করা কলমে। ব্যালট যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না-হয়, সকলের চিহ্নের কালি যাতে একইরকম থাকে, তার জন্যই এই ‘সতর্কতা’।
সন্ধ্যায় বিধায়ক আবাসে কংগ্রেস বিধায়করা পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবের কাছ থেকে বুঝে নেন, কী ভাবে ভোট দিতে হবে। প্রণববাবুর নামের পাশের নির্দিষ্ট জায়গায় ‘১’ লিখতে যাতে ভুলচুক না-হয়, তা বারবার হাতে-কলমে বোঝানো হয় তাঁদের। তার আগে প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে পূর্ব নির্দেশমতো হাজিরা দিয়ে আরও এক প্রস্ত ভোটপ্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা সেরে নেন দলীয় বিধায়করা। ভোটপ্রক্রিয়া বোঝার পরে বিধায়ক আবাসে নৈশভোজে বিধায়কদের সঙ্গে যোগ দেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ। কংগ্রেস সূত্রে খবর, অসুস্থতার জন্য বাদুড়িয়ার বিধায়ক আব্দুল গফ্ফর ছাড়া বাকিরা বৈঠকে ছিলেন। গফ্ফর ভোট দিতে আজ বিধানসভায় আসবেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে এদিন সন্ধ্যায় আলিমুদ্দিনে হাজির হন চার বাম দল সিপিএম, ফরওয়ার্ড ব্লক, সমাজবাদী পার্টি এবং ডিএসপি-র বিধায়কেরা (দুই বাম শরিক সিপিআই এবং আরএসপি ভোটদানে বিরত থাকছে)। ভোটের প্রাক্কালে বিধায়কদের উপস্থিতি ‘নিশ্চিত’ করাই ছিল আলিমুদ্দিনে বৈঠকের উদ্দেশ্য। সেখানে ভোটদানের খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা করেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, বামফ্রন্টের প্রাক্তন মুখ্য সচেতক রবীন দেব এবং বামফ্রন্টের প্রবীণ বিধায়ক, ডিএসপি-র প্রবোধচন্দ্র সিংহ। বামফ্রন্টের যে ৫২ জন বিধায়কের প্রণববাবুর পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা, তাঁদের মধ্যে সিপিএমের আনিসুর রহমান তাঁর জেলা মুর্শিদাবাদে দলীয় কর্মসূচির জন্য এবং ফব-র অক্ষয় ঠাকুর অসুস্থতার জন্য বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি। জনা তিরিশেক বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। তবে অনুপস্থিত দু’জনই তাঁদের পরিষদীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, আজ ভোট দিতে বিধানসভায় যাবেন। ইদানীং কালে সিপিএমের ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা হিসাবে পরিচিত আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাও এ দিন আলিমুদ্দিনে হাজির ছিলেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.