নকশায় সায় মমতার
মহাকরণের ভার কমাতে নতুন ভবন
হাকরণের সামনেই অবিকল মহাকরণ।
পরিসরে একটু ছোট। উচ্চতাতেও। ভবিষ্যতে এখানেও বসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লালদিঘির পাড়ে জিপিও-র ঠিক উল্টো দিকে, এখন যেখানে সরকারি গাড়ি রাখা হয়, সেখানেই তৈরি হবে মহাকরণের অ্যানেক্স ভবন। পূর্ত দফতরের পরিকল্পনা এমনই।
দু’শো বছরেরও বেশি পুরনো ঐতিহ্যবাহী ভবন মহাকরণের ভার লাঘব করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে সব দফতরকে আনতে চাইছেন এক ছাদের তলায়। তিনি মনে করছেন, সল্টলেক বা কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় সরকারি দফতরগুলি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় কাজে অসুবিধা হচ্ছে। এক ছাদের নীচে সব দফতর থাকলে উন্নয়নের কাজে গতি আসবে। তাই অ্যানেক্স ভবন ছাড়াও বিধানসভার কাছাকাছি কোথাও গোটা মহাকরণটাকেই তুলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে মুখ্যমন্ত্রীর। জমির খোঁজ চলছে।
সরকারি সূত্রের খবর, অ্যানেক্স ভবনের প্রাথমিক ছবি ও স্কেচ দেখে নতুন প্রকল্পে সিলমোহর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ইচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর গোটা অফিসটাই নিয়ে যাবেন অ্যানেক্স ভবনে। আর থাকবে নিজের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দফতর স্বরাষ্ট্র ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন। পরবর্তী কালে আরও কিছু দফতরও নতুন ভবনে চলে যেতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
কেমন হবে নতুন ভবনের চেহারা?
অ্যানেক্স ভবনটি হবে ছ’তলা। সবার উপরে এক কোণে হবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘর। সচিব ও অন্য অফিসারদের ঘর তার লাগোয়া। থাকবে বড়সড় পোডিয়ামও। স্থপতির প্রাথমিক পরিকল্পনা, ছ’তলায় মূল ভবন থেকে খানিকটা অংশ বাড়িয়ে একেবারে লালদিঘির উপরে তৈরি হবে ফুলের বাগান। লাগানো হবে ক্যাকটাস, বনসাইও। ওই তলাতেই থাকবে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎপ্রার্থীদের বসার ঘর। নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে পৌঁছতে হবে সেখানে। নতুন ভবনের নীচেও মাটির তলায় হবে দোতলা পার্কিং প্লাজা। একতলায় থাকবে মন্ত্রীদের দেহরক্ষী ও গাড়িচালকদের বিশ্রাম কক্ষ, পুলিশ অফিস, কেয়ারটেকারের ঘর।
গোটা ভবনটি হবে কেন্দ্রীয় ভাবে বাতানুকূল। তার জন্য পৃথক ট্রান্সফর্মার, জেনারেটরের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। বর্তমান মহাকরণে শুধু সংরক্ষিত এলাকাটুকুই ক্লোজ্ড সার্কিট (সিসি) টিভি-র পর্দায় দেখা যায়। অ্যানেক্স ভবনে প্রতিটি তলায় সিসি টিভি লাগিয়ে নজরদারি চালাবে পুলিশ। বাকি তলাগুলি কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের উপরে। তবে একাধিক ক্যান্টিন এবং এটিএম বুথেরও সংস্থান থাকছে নতুন ভবনে।
কিন্তু সব দফতরকে এক ছাদের তলায় না-আনা পর্যন্ত মূল মহাকরণ ও অ্যানেক্স ভবনের মধ্যে যোগাযোগ হবে কী ভাবে?
প্রাথমিক পরিকল্পনা, ভূগর্ভ পথ তৈরি করে দু’টি ভবনকে জুড়ে দেওয়া হবে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “জিপিও-র উল্টো দিকে মহাকরণের অ্যানেক্স ভবন তৈরি হলে স্বাভাবিক ভাবেই ওই ফুটপাথ দিয়ে সাধারণ মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। সে-ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে।” আর সাবওয়ে যদি দু’টি ভবনকে জোড়া লাগায়, উপরের রাস্তায় গাড়ি চলাচলে কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকেরা।
মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়ার পরে নতুন ভবন তৈরিতে কত খরচ হবে, হিসেব করতে বসেছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। মহাকরণ সূত্রের খবর, অ্যানেক্স ভবনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার পরে মূল নকশাটি পাঠানো হবে হেরিটেজ কমিশনে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই নতুন ভবন তৈরির কাজে হাত দেওয়া হবে।
এর বাইরে আলিপুরে তিন একর জমিতে সায়েন্স সিটির আদলে একটি অডিটোরিয়াম তৈরি করবে সরকার। সেটি হবে বহুতল। থাকবে অ্যাম্ফিথিয়েটার। নাম হবে ‘ধনধান্যে’। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষেই এই নামকরণ।” আজ, বৃহস্পতিবার রবীন্দ্র সদনে দ্বিজেন্দ্রলালের স্মরণ অনুষ্ঠানে মমতা ওই অডিটোরিয়ামের শিলান্যাস করবেন। শেষ হবে কবে? মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, পূর্ত দফতর কাজ শেষ করলেই হয়ে যাবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.