গোয়ালেই হচ্ছে অঙ্গনওয়াড়ির রান্না
কদিকে চরছে গরু, ছাগল, মুরগি আর অন্য দিকে, শিশু ও প্রসূতিদের জন্য তৈরি হচ্ছে পরিপূরক পুষ্টিকর খাবার। এভাবেই কোথাও পুকুর পাড়ে আবার কোথাও গোয়াল ঘরে কেতুগ্রামের বেশ কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলছে বলে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অভিযোগ। ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা কেতুগ্রাম ২-এর বিডিও-র কাছে স্থায়ী আস্তানা তৈরির দাবিও জানিয়েছেন। বিডিও হেমন্ত ঘোষ বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য দু’কাঠা জমি প্রয়োজন। গ্রামবাসীরা জায়গা দিলেই আমরা ভবন তৈরি করে দেব।”
ব্লক অফিস সূত্রে জানা যায়, কেতুগ্রামের ৭টি পঞ্চায়েতে ১৬২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে ৮২টির নিজস্ব ঘর রয়েছে। তবে বেশ কিছু জায়গায় স্থানীয় ক্লাবঘরেও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে। সরকারি হিসেবই বলে, কেতুগ্রাম ২ ব্লকের ৩৪টি জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে ফাঁকা জায়গাতে। কেতুগ্রাম ২-এর মুরুন্দি, নলিয়াপুর, দত্তবাটি-সহ ৭টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নতুন ভবন তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে অর্থ সাহায্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
রান্না হয় পুকুর পাড়েও।—নিজস্ব চিত্র।
এই ব্লকের শিবলুন পোস্ট অফিসের কাছে রয়েছে ৫২ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। রাস্তার ধারে একফালি জায়গায় একটা গোয়ালঘর। পিছনেই রয়েছে ঘোষপুকুর। সেখানে গরু-ছাগলের পাশাপাশিই উনুন জ্বেলে চলছে শিশু ও প্রসূতিদের জন্য খিচুড়ি রান্না। এককোণায় বাচ্চাদের পড়ানোও চলছে। ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী রমা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খাতায় কলমে এখানে শিশু সংখ্যা ৫০। কিন্তু পড়তে আসে ১০ থেকে ১২ জন।” কেন? তিনি বলেন, “পাশেই পুকুর। ওইটুকু ঘরে রান্নাবান্নার মধ্যে ৫০ জন বসার জায়গা কোথায়? তার মধ্যে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কী জবাব দেব?” সহায়িকা সাগর রানি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১৯৮৫ সাল থেকে চলছে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। কিন্তু এখনও স্থায়ী কোনও জায়গা হয়নি। আমাদের ঘুরে ঘুরে বেড়াতে হয়।”
গঙ্গাটিকুরির তালেরপাড় এলাকার ১৪৫ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দশাও প্রায় একই। একজনের বাড়িতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে। গোয়ালঘরেই তৈরি হয় পুষ্টিকর খাদ্য। এখানে পড়ুয়া আছে ৭০ জন। কর্মী রানু মাঝি বলেন, “শিশুদের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা দেব কী, গরু ছাগলের হাত থেকে খাবার পাহারা দিতেই সময় চলে যায়।” অভিভাবকেরা জানান, পাশেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অনেকটা জায়গা পড়ে রয়েছে। কিন্তু সেখানে পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, পার্ক তৈরি না করে ওখানেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য জায়গার ব্যবস্থা করতে পারত বিডিও দফতর। বিডিও এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও শিশু শিক্ষা প্রকল্প আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের প্রসূতী বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল ও শিশু বিশেষজ্ঞ অরূপ গুহ রায় বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে প্রসূতী ও শিশুদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে খাবার দেওয়ার কথা। কিন্তু জায়গা পরিষ্কার না হলে বর্ষায় পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।”
এখন অপেক্ষা কবে ‘ঘর’ জোটে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.