এমএএমসি পাহারার দায়িত্বে নতুন সংস্থা
মএএমসি-র প্রহরার দায়িত্ব দেওয়া হল এক বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার হাতে। বুধবার দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন সংস্থার কনসর্টিয়ামের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে আপাতত পাহারা দেওয়ার জন্য বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা এই রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার চাবি ওই নিরাপত্তা সংস্থার হাতে তুলে দেয় সিআইএসএফ।
দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানার পর ৩০ মে এমএএমসি-র পাহারার দায়িত্ব থেকে সরে যায় সিআইএসএফ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তার পর থেকেই সন্ধ্যা নামতেই চোরেরা কারখানার যন্ত্রাংশ সরিয়ে ফেলতে শুরু করে। লোহাচোরেরা কারখানার মূল্যবান যন্ত্রপাতি সরিয়ে ফেলে। ৩ জুন পুরভোট থাকায় পুলিশ তা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। ফলে কারখানার নজরদারিতে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করতে পারেনি প্রশাসন। ভোট মিটতে ১৫ জন পুলিশকর্মী রাখা ও পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়। তাতে চুরি খানিকটা কমলেও বিশাল এই কারখানা চত্বর অল্প পুলিশকর্মীর পক্ষে নজরে রাখা সম্ভব ছিল না। তা ছাড়া, সিআইএসএফ চাবি হস্তান্তর না করায় পুলিশ কারখানার ভিতরে ঢুকতে পারত না। তারা শুধু বাইরে থেকে পাহারা দিত। ফলে, ফাঁকফোঁকর দিয়ে চুরি চলতেই থাকে। সিআইএসএফ প্রহরা ফের বহাল করার দাবিতে সরব হয় কর্মী সংগঠনগুলি।
২০০২ সালে কারখানাটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই কারখানা। বছর কয়েক আগে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড (বিইএমএল), কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল) এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (ডিভিসি) কনসর্টিয়াম হাইকোর্টে নিলামে সর্বোচ্চ ১০০ কোটি টাকা দর দিয়ে এমএএমসি-র দায়িত্ব পায়। ২০১০ সালের ১৮ অগস্ট এই কনসর্টিয়াম লিক্যুইডেটরের হাত থেকে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয়।
সিআইএসএফ প্রহরা রাখা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা গিয়েছে বহু বার। সিআইএসএফের থাকার জন্য যে ব্যারাক রয়েছে তা থাকার অনুপযুক্ত বলে অভিযোগ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, সেগুলি সংস্কারে উদ্যোগী হয়নি কনসর্টিয়াম। কারখানার কর্মী সংগঠনগুলির তরফে বিষয়টি রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যাকে জানানো হয়। কিছু দিন আগে কাঁকসায় একটি কারখানার শিলান্যাসে এসে শিল্পমন্ত্রী জানান, সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। তিনি বলেছিলেন, “সিআইএসএফ-কে যাতে পুনরায় এমএএমসি-র নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা যায়, সে ব্যাপারে তিন সংস্থা কেন্দ্রীয় সরকারকে শীঘ্রই চিঠি পাঠাবে। তার প্রতিলিপি দেবে আমাদের। রাজ্য সরকারের তরফেও এ ব্যাপারে চেষ্টা চালানো হবে।” তিনি জানিয়েছিলেন, ৪৩টি আবাসনে সিআইএসএফ জওয়ানেরা থাকেন। সেগুলির সংস্কার করার খরচ ওই তিন সংস্থা ভাগ করে নেবে।
কিন্তু এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। তত দিন কারখানা নিরাপত্তাহীন অবস্থায় পড়ে থাকলে বহু মূল্যবান যন্ত্রাংশ খোয়া যাবে বলে আশঙ্কা কারখানার শ্রমিক-কর্মী থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তা দূর করতেই আপাতত বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার হাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল। কোল ইন্ডিয়ার জিএম সনৎ দাস, সিনিয়র ম্যানেজার রঞ্জিৎ কুমার তলাপাত্র, বিইএমএলের আধিকারিক বিশ্বজিৎ রায় এবং ডিভিসি-র তপন কুমারের উপস্থিতিতে কারখানার চাবি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার হাতে তুলে দেয় সিআইএসএফ। এখন থেকে কারখানার ভিতর ও বাইরে, দু’জায়গাতেই প্রহরার কাজ চলবে। থাকবেন ৪৫ জন নিরাপত্তারক্ষী।
কর্মী সংগঠনগুলির আবার দাবি, নিরাপত্তার এই নতুন ব্যবস্থা আসলে ‘সাময়িক স্বস্তি’। কারখানার আইএনটিইউসি নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “যা হল তা মন্দের ভাল। তবে দ্রুত সিআইএসএফ বহাল করা এবং কারখানা খোলার ব্যাপারে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করতে হবে। তা না হলে কনসর্টিয়ামের উপর থেকে প্রাক্তন কর্মীদের ভরসা চলে যাবে।” সিটু নেতা বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তীর আবার দাবি, “বেসরকারি নিরপত্তারক্ষী দিয়ে বিশেষ সুরাহা হবে বলে মনে হয় না। কারখানা খুলতে কনসর্টিয়াম টালবাহানা করছে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.