শিবলুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র
ডাক্তার-নার্সদের দেখা নেই, কাজ চালাচ্ছেন কর্মীই
চিকিৎসকের দেখা মেলে কখনও-সখনও। দু’জন নার্স রয়েছেন। তবে তাঁরাও যে সব সময় থাকেন, তা নয়। ফলে রোগী দেখভালের দায়িত্ব পড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একমাত্র চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর উপরেই। কেতুগ্রামের শিবলুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সম্পর্কে এ সব অভিযোগ জানাতে মঙ্গলবার কাটোয়ার মহকুমাশাসকের দফতরে হাজির হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর ঘটনাচক্রে এ দিনই দু’জন নার্স ছুটিতে থাকায় প্রায় চল্লিশ জন রোগী দেখলেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল জানান, কেন এমন হল তা খতিয়ে দেখা হবে।
কেতুগ্রাম ২ ব্লকে এই শিবলুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক খোদ বিএমওএইচ তাপস বাগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তিনি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন মাঝে-মধ্যে। কবে তিনি আসেন, কবে আসেন না কারও জানা নেই। নার্সেরা ওষুধপত্র দিয়ে দেন। তবে অনেক সময়ে তাঁরা অনুপস্থিত থাকায় চিকিৎসার দায়ভার গিয়ে পড়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী উত্তম মণ্ডলের উপরেই।
ওষুধ ওঁরই হাতে। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার দুপুরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, দু’জন নার্সই ছুটিতে রয়েছেন। ওষুধপত্র সাজিয়ে বসে আছেন উত্তমবাবু। পেট খারাপ, জ্বর ইত্যাদিতে আক্রান্ত কিছু রোগী এসেছেন। তাঁদের ওষুধ দিচ্ছেন উত্তমবাবুই। তিনি জানালেন, এখানে খুব বেশি রোগী হয় না। এ দিন তিনি জনা চল্লিশ রোগী দেখেছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের খাতায় রোগীদের নাম, রোগ ও কী ওষুধ দেওয়া হয়েছে, সে সব লিখে রাখেন তিনি। উত্তমবাবুর কথায়, “চিকিৎসকের কথা মতো জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ, সবই আমাকে করতে হয়। মাঝে-মধ্যে রোগীও দেখতে হয়।” এই কর্মীর উপরেই যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নির্ভরশীল, তা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যায়। এ দিন সেখানে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন পূর্ণিমা কোনাই, মলয় ঘোষ, দুর্গা কোনাইরা। তাঁদের কথায়, “উত্তমবাবুই আমাদের ওষুধপত্র দেন। তাঁকেই আমরা ডাক্তারবাবু বলে জানি।”
চিকিৎসক তাপসবাবুর অবশ্য দাবি, তিনি প্রতি সোম, বুধ ও শুক্রবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। তাঁর বক্তব্য, “জেলা স্বাস্থ্য দফতর সবই জানে।” কেতুগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, অন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যেখানে দিনে গড়ে একশো-দেড়শো রোগী হয়, সেখানে শিবলুনে তা ৪০-৫০ জনের বেশি হয় না।
কাটোয়ার মহকুমাশাসক দেবীপ্রসাদ করণম এ দিন বলেন, “শিবলুন গ্রামের বাসিন্দারা আমার কাছে এসেছিলেন। ওখানে যাতে নিয়মিত চিকিৎসক থাকেন, তার জন্য এসিএমওএইচ-কে বলা হয়েছে।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল বলেন, “চিকিৎসকের সমস্যা রয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে সেই সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করছি। ছোটখাটো ক্ষেত্রে নার্সেরাই চিকিৎসা করে দেন। তবে চুতর্থ শ্রেণির কর্মীকে কেন চিকিৎসা করতে হল, তা দেখা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.