আপাত স্বস্তি শিলিগুড়িতে
খাত খুঁড়ল সেচবিভাগ
বাঁধ ভাঙার ষাট ঘণ্টা পরে চম্পাসারির মিলনমোড়ে মহানন্দার স্রোত ঘোরানো সম্ভব হল। মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় ৭টি জেসিপি মিলে একযোগে কাজ করে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে গ্রামে জল ঢোকা বন্ধ করতে সমর্থ হন। রবিবার ভোরে ওই এলাকায় বাঁধ ভাঙার পরে এলাকার ১২-১৫টি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে ওই দিন বিকাল থেকে নদীর স্রোত ঘোরানোর কাজে নামে সেচ দফতর। এলাকার বাসিন্দারাও ব্যক্তিগত জেসিপি নিয়ে নদীর স্রোত ঘোরানোর কাজে নামেন। নদীর মাঝখানে খাত থেকে বালি সরিয়ে জল বার হওয়ার পথ করে দেওয়া হয়। তাতে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢোকার পরিমাণ কমে যায়। শেষ পর্যন্ত বালি ফেলে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢোকা বন্ধ করা হয়। তবে এদিন বিকেল থেকে ফের বৃষ্টি নামায় নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ফের মহানন্দায় জল বাড়লে বাঁধের ওই ভাঙা অংশ দিয়ে ফের জল ঢুকবে বলে আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। তবে জল ঢোকা বন্ধ হওয়ায় মিলন মোড় এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হয়েছে। এলাকার অধিকাংশ বাড়ি, রাস্তাঘাট থেকে জল নেমে গিয়েছে। জল নেমেছে সমরনগর এলাকাতেও। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢোকা বন্ধ হলেও নদীতে ফের জলস্ফীতি হলে নতুন করে জল ঢুকবে। সেটা বন্ধ করতে ভাঙা অংশ মেরামত করা দরকার। সেই কাজে এখনও নামেনি সেচ দফতর। এমনকী, ভাঙা অংশ মেরামতির কাজে তদারকির জন্য ঘটনাস্থলে সেচ দফতরের কোনও ইঞ্জিনিয়রকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। সেচ দফতরের শিলিগুড়ির এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র সমর সরকার দাবি করেন, “ঘটনাস্থলে আমাদের ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন। হয়তো আশপাশে রয়েছেন। বাঁধের ভাঙা অংশের মেরামতির জন্য বালির বস্তা তৈরি করা হচ্ছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই মেরামতির ব্যবস্থা হবে।” এদিন ওই এলাকা পরিদর্শনে যান সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যও। তাঁর সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার, রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক এবং কাউন্সিলর মুকুল সেনগুপ্তও যান। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী বলেন, “এমন একটা ভয়ঙ্কর ঘটনার পরে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতির কাজ হবে বলে আশা করেছিলাম। এখানে কাজের যে গতি দেখলাম তাতে সেটা মনে হল না। একজন ইঞ্জিনিয়রকেও ঘটনাস্থলে দেখলাম না।” প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর দাবি, বাম জমানায় তাঁরা বর্ষার অনেক আগে বৈঠক করে বাঁধ মেরামতির পরিকল্পনা করে কাজে নামতেন। এ বার সেটা হয়নি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “তা হলে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে এসে এত যে বৈঠক করলেন সেখানে কোন বিষয়ে আলোচনা হল? উত্তরবঙ্গে বাঁধ মেরামতি তো অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়া উচিত।” বাঁধ মেরামতি নিয়ে বাসিন্দাদের এই ক্ষোভের কথা পৌঁছেছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যের কাছেও। এসজেডিএর কর্মীদের এদিন ঘন ঘন বাঁধের ভাঙা অংশ পরিদর্শনে পাঠিয়ে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হন। এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান বলেন, “নদীর স্রোত ঘোরানো গিয়েছে, এটা বড় বিষয়। ভাঙা অংশ যাতে দ্রুত মেরামত হয় সেদিকে নজর দিতে সেচ আধিকারিকদের বলেছি।” জল নেমে যাওয়ায় মিলনমোড় এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত, এসজেডিএ, ব্লক প্রশাসনের তরফে এদিনও বাসিন্দাদের খিচুড়ি খাওয়ানো হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.