সিঙ্গুরের ‘অনিচ্ছুক’ চাষিদের রেশনে দ্বিগুণ চাল দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে ‘ইচ্ছুক’ ও ‘অনিচ্ছুক’ চাষিদের মধ্যে ‘বিভাজন’ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা সিপিএম নেতৃত্বের।
শুধু সিঙ্গুর নয় অবশ্য। আয়লা-বিধ্বস্ত এলাকাতেও দ্বিগুণ চাল দেওয়া হবে বলে মঙ্গলবার মহাকরণে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এত দিন ওই দুই ধরনের গ্রাহকেরা পরিবার পিছু মাসে ২ টাকা দরে ৮ কেজি চাল দেওয়া হত। আগামী ১ অগস্ট থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তা বাড়িয়ে ১৬ কেজি করা হচ্ছে। এতে সিঙ্গুরের ৩৭৪৬ জন এবং আয়লা-বিধ্বস্ত এলাকায় ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৫৮ জন উপকৃত হবেন বলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি।
সিঙ্গুরে ‘অনিচ্ছুক’ চাষিদের জন্য সরকারি সাহায্য বাড়ানো নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর মতে, “সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে ইচ্ছুক এবং অনিচ্ছুকদের মধ্যে বিভাজন আরও স্পষ্ট হল। এই বিভাজন অনৈতিক। ওঁদেরই অকাজের ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে প্রলেপ দেওয়ার লক্ষ্যে এখন এই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।” সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের রাজ্য নেতা সজল অধিকারীর দাবি, “সরকার সকলেরই। কিন্তু যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তাতে চাষিদের দ্বিধাবিভক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক নির্বিশেষে অনুদানের ব্যবস্থা করুক সরকার।” তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে ‘স্বাগত’ জানিয়ে ‘সিঙ্গুর কৃষিজমি রক্ষা কমিটি’র আহ্বায়ক তথা তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, চাষিদের পাশে থাকতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। আরও এক বার তার প্রমাণ মিলল। নিন্দুকদের কোনও গঠনমূলক কাজ নেই, তাই মনগড়া সমালোচনা করেন।” রমজান এবং দুর্গাপুজোর কথা মাথায় রেখে আগামী মাস থেকে রেশনে কম দামে ছোলা, ময়দা, ভোজ্য তেল-সহ বিভিন্ন জিনিস বিপণনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও এ দিন জানান মমতা। একই কারণে অন্নপূর্ণা যোজনায় ৫৯ হাজার ৯৬৮ জনকে অতিরিক্ত ১০ কিলোগ্রাম করে চাল দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। |