ডিজেল-পেট্রোলের দামের ফারাক বদলে দিয়েছে ভারতে গাড়ি ব্যবসার অঙ্কটাই। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডিজেল-গাড়ি তৈরি করতে নাভিশ্বাস সংস্থাগুলির। অবস্থা সামলাতে ডিজেল ইঞ্জিন তৈরির উপর জোর দিচ্ছে তারা। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন ফোর্ড ইন্ডিয়া। ৭.২ কোটি ডলার বা ৩৯৬ কোটি টাকা লগ্নিতে ১৪ মাসের ‘রেকর্ড’ সময়ে চেন্নাইয়ে ইঞ্জিন কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়েছে সংস্থাটি। বাড়তি ইঞ্জিনের প্রায় ৯০ শতাংশই আপাতত হবে ডিজেল ইঞ্জিন।
এতদিন চেন্নাইয়ে বছরে আড়াই লক্ষ ইঞ্জিন তৈরি করত ফোর্ড। চাহিদা মতো পেট্রোল বা ডিজেল ইঞ্জিন তৈরির ক্ষমতা (ফ্লেক্সিব্ল) আছে এই কারখানাটির। এ বার তা বেড়ে হচ্ছে বার্ষিক ৩.৪০ লক্ষ।
চাহিদা মতো ডিজেল গাড়ির জোগান দিতে না-পারায় অন্য সংস্থাগুলির মতোই সমস্যায় পড়ে ফোর্ড ইন্ডিয়া। সংস্থার প্রেসিডেন্ট ও এমডি মাইকেল বোনহ্যাম জানান, এই অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে তাঁদের ডিজেল গাড়িগুলির জন্য আবেদন করে ক্রেতাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে (ওয়েটিং পিরিয়ড) ৩ মাস পর্যন্ত। কিন্তু বাড়তি ডিজেল ইঞ্জিন তৈরির হলে সেই সময়টা ২-৩ সপ্তাহে নামবে বলে আশা তাঁদের। বাড়তি ডিজেল ইঞ্জিন অগ্রাধিকার পাবে ফিগো ও ক্লাসিক গাড়ির ক্ষেত্রে।
ডিজেল গাড়ির চাহিদার কথা ভেবেই মারুতি-সুজুকি অধিগ্রহণ করেছে সুজুকি পাওয়ার ট্রেন (সুজুকি-র অধীন যে সংস্থা মারুতিকে ডিজেল ইঞ্জিন সরবরাহ করত)-কে। বার্ষিক ১ লক্ষ করে তিন বছরে ডিজেল ইঞ্জিন সরবরাহের জন্য ফিয়াটের সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা। সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০১৪-র মধ্যে গুড়গাঁও -এ তিন লক্ষ ডিজেল ইঞ্জিন তৈরির ক্ষমতাসম্পন্ন কারখানা গড়তে ১৭০০ কোটি টাকা লগ্নির। অন্য দিকে, হুন্ডাই তাদের ডিজেল ইঞ্জিন কারখানা তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে ফের ভাবছে। যা এত দিন স্থগিত রেখেছিল তারা। হোন্ডা মোটর-ও হাঁটছে একই পথে।
চড়া সুদ, পেট্রোলের দাম ইত্যাদির জন্য পেট্রোল গাড়ির বিক্রি তলানিতে। ডিজেল গাড়ি সে ধাক্কা কিছুটা সামলাচ্ছে।
এ দিনই চেন্নাই কারখানা থেকে চার লক্ষ তম ইঞ্জিনটি আনুষ্ঠানিক ভাবে ছাড়ল সংস্থা। সানন্দ কারখানাও ২০১৪-এর গোড়ায় চালু হবে, জানান বোনহ্যাম। সেখানে ইঞ্জিন ও গাড়ি কারখানা গড়তে ৪০০০ কোটি টাকা লগ্নি করছে সংস্থাটি। |