ট্রাক থামিয়ে চালককে মারধর করে গাড়িতে তুলে মালবোঝাই ট্রাকটি নিয়ে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ট্রাকে থাকা ‘জিপিএস সিস্টেম’ অনুসরণ করে পুলিশ ধরে ফেলে ওই মাল কোথায় বিক্রি হয়েছে। পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় ৫ দুষ্কৃতীও। মঙ্গলবার তাদের আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাদের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৪ জুলাই কোকওভেন থানা এলাকার হ্যানিমান সরণির একটি বেসরকারি কারখানা থেকে প্রায় ১৫ মেট্রিক টন টিএমটি বার বোঝাই একটি লরি রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বেরিয়ে যায়। পুরোনো টোলট্যাক্সের কাছে বেহাল রাস্তায় ট্রাকটির গতি ছিল বেশ কম। হঠাৎই বাইকে করে দু’জন গিয়ে ট্রাক থামায়। |
পিছনের একটি গাড়ি থেকে জনা দশেক দুষ্কৃতী ট্রাকে উঠে পড়ে। চালককে মারধর করে হাত-পা বেঁধে গাড়িতে তুলে নিয়ে দুষ্কৃতীরা ট্রাক নিয়ে চম্পট দেয়। গভীর রাতে কেন্দা ফাঁড়ির কাছে কোনও এক জায়গায় তারা ট্রাক চালককে নামিয়ে দেয়। কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে কোকওভেন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
তদন্তে নেমে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, লরিটিতে জিপিএস সিস্টেম চালু রয়েছে। কলকাতার যে সংস্থা ওই সিস্টেম লাগিয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। সংস্থার কাছ থেকে ঘটনার দিন ও পরের দিন লরিটি কোথায় কোথায় ঘুরেছে তার অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ সংগ্রহ করা হয়। পুলিশ জানতে পারে, ট্রাকটি প্রথমে অঙ্গদপুর, গ্যামনব্রিজ, ডিভিসি মোড় হয়ে কাঁকসা থানার আড়রা, গোপালপুরে যায়। পরে আবার ওই রুটেই ফিরে আসে দুর্গাপুর শহরে। ইস্পাত নগরীর সিআর দাস রোডে লরিটি বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করতে দেখে পুলিশ ধারণা করে, আশপাশের কোনও এলাকায় ইস্পাতের বারগুলি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। |
এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে, অবৈধ লোহার এক করবারি বারগুলি নিয়েছে। সেগুলি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রানিগঞ্জের এক কাঁটায়। পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে জানতে পারে সেগুলি অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। অন্ডাল ও দুর্গাপুর থানা এলাকার মাঝামাঝি জায়গা থেকে বারবোঝাই ট্রাকটিকে আটক করে পুলিশ। চালক গোবিন্দ রুজকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে বিচারক ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের নাম জানতে পারে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সঞ্জু মজুমদার, গৌড় মণ্ডল, নির্মল দাস ওরফে বুলি, নাদিম আখতার ও মহম্মদ কাদেরকে। তাদের বিধাননগর, নইমনগর প্রভৃতি এলাকা থেকে ধরা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। |