ইসিএলের জমি দখল করে নির্মাণ কাজ শুরু করার অভিযোগ উঠেছে একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে। পুলিশের কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ করেছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। নির্মাণকাজ বন্ধ করার জন্য আসানসোলের মহকুমাশাসকের কাছে ১৪৪ ধারা জারির আবেদনও করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অভিযুক্ত সংস্থার অবশ্য দাবি, যেখানে নির্মাণ চলছে, সেই জমিটি তাদেরই।
আদালতের নির্দেশে ইসিএল কর্তৃপক্ষ যখন বিভিন্ন এরিয়ায় দখল করে রাখা কোলিয়ারি আবাসন ও ফাঁকা জমি পুনর্দখলে নেমেছে, সেই সময়েই সালানপুরে তাঁদের জমি দখল করে একটি বেসরকারি কম্পিউটার প্রস্তুতকারক সংস্থা নির্মাণকাজ চালাচ্ছে বলে এই অভিযোগ উঠেছে।
সপ্তাহখানেক আগেই সালানপুরের বনজেমাহারি কোলিয়ারির খনি সম্প্রসারণের জন্য কয়েকটি বস্তি উচ্ছেদের পরিকল্পনা করে ইসিএল। প্রতিবাদে তাদের সালানপুরের জেনারেল ম্যানেজারের দফতরে বিক্ষোভ দেখান বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। এর পরেই বিধানবাবু অভিযোগ তোলেন, একাধিক বেসরকারি সংস্থা ইসিএলের জমি দখল করে নির্মাণ তুলছে। অভিযোগ পাওয়ার পরে ইসিএল কর্তৃপক্ষ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বনজেমাহারি কোলিয়ারি সংলগ্ন এলাকায় ইসিএলের জমি দখল করে একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থা নির্মাণকাজ করছে। তার মধ্যে রয়েছে এই কম্পিউটার প্রস্তুতকারী সংস্থাও আছে।
ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার জিএম হরিসাধন মুখোপাধ্যায় জানান, সংস্থার তরফে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে পরীক্ষা করার পরে দেখা গিয়েছে, দেন্দুয়া মৌজার ৮৯১, ৯০৩, ৯১০, ৯৬৯ নম্বর দাগে ইসিএলের জমিতে এই সব নির্মাণ হচ্ছে। হরিসাধনবাবু বলেন, “জমি দখল করে নির্মাণে লিপ্ত বেসরকারি সংস্থাকে রবিবারই কাজ বন্ধ করার নোটিস পাঠিয়েছি। সোমবার সালানপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের কাছে ১৪৪ ধারা জারি করার জন্য আবেদন করেছি।”
জিএম জানান, যে জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে, সেখানে ভূগর্ভস্থ খনির একাধিক প্রবেশপথ আছে। খনি বেসরকারি মালিকানায় থাকার সময়ে এ সব জায়গা থেকে কয়লা তোলা হয়েছে। খনি রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হওয়ার পরে এই বিস্তীর্ণ অঞ্চল ইসিএলের সম্পত্তির আওতায় এসেছে। খনি সম্প্রসারণের জন্য যে কোনও দিন এই জায়গা ব্যবহার করা হবে। এই জমিতে যারা বেআইনি ভাবে নির্মাণ তুলতে শুরু করেছে, তারা নিজেরা ভেঙে না দিলে ইসিএল সে সব ভেঙে দেবে বলেও দাবি করেন জিএম। তাঁর আরও দাবি, সালানপুর এরিয়ার গৌরান্ডিতেও সংস্থার বেশ কিছু জমি দখল করে পাঁচিল তোলার কাজ চলছে। কে বা কারা এই পাঁচিল তুলছে, তা খোঁজ করা হচ্ছে।
ওই বেসরকারি কম্পিউটার প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। ইসিএল সূত্রে জানা যায়, ওই সংস্থার তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, যে জমিতে নির্মাণ হচ্ছে, সেটি তাদের। জমির মালিকানা সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্রও আছে বলে তাদের দাবি। ইসিএল অবশ্য তা মানতে নারাজ। জিএম জানান, প্রয়োজনে তাঁরা আদালতে যাবেন। আসানসোলের মহকুমাশাসক সুরজিৎ দত্তশর্মা মঙ্গলবার বলেন, “ইসিএলের তরফে আবেদন এসেছে কি না, আমার খেয়াল নেই। তবে এমন ঘটে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |