সিপিএম-তৃণমূল মিলে ‘প্যানেল’ দিল সমবায়ে
খাদ্যমন্ত্রী যতই হুঁশিয়ারি দিন, তৃণমূলের নিচু তলার কর্মীরা ফের সিপিএমের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে নির্বাচনে সামিল হলেন।
নদিয়ার কৃষ্ণনগর লাগোয়া ব্রহ্মনগর কৃষি উন্নয়ন সমিতির সাধারণ নির্বাচনে ‘জোট’ করে লড়ছেন স্থানীয় সিপিএম ও তৃণমূল নেতারা। ১৭ জুলাইয়ের এই ভোটে দু’টি প্যানেল জমা পড়েছে। দু’টিতেই মিলেমিশে সিপিএম এবং তৃণমূল নেতাদের নাম রয়েছে। তাই যে প্যানেলই জিতুক, তৃণমূল ও সিপিএমের প্রার্থীরা ‘জোট’ বেঁধেই ক্ষমতায় আসবেন।
একটি প্যানেলে রয়েছেন নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের বিমল চক্রবর্তীর সঙ্গে রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য নেপাল ঘোষ। ওই প্যানেলে এলাকার সিপিএম ও তৃণমূলের প্রভাবশালী কয়েকজন কর্মীর নামও রয়েছে। অন্য প্যানেলটিতে রয়েছেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা গিরীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। তাঁর স্ত্রী সারথি বিশ্বাস তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য। সারথিদেবী গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৎকালীন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সিপিএমের রমা বিশ্বাসকে পরাজিত করেছিলেন। ওই প্যানেলেই রয়েছেন সিপিএমের বন্ধুনগর শাখা কমিটির সদস্য আনোয়ার মণ্ডল।
সম্প্রতি সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করে তাঁদের কোনও রকম ভাবে সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কিন্তু তারপরেও কেন এই ভাবে মিলেমিশে তাঁরা ভোটে দাঁড়াচ্ছেন? তৃণমূলের নেপালবাবুর বক্তব্য, “সমিতির উন্নয়নের স্বার্থেই আমরা দলের ঊর্ধ্বে উঠে এই নির্বাচনে লড়ছি। এমন লোকজনকে নিয়েই সমিতির পরিচালন সমিতি গঠন করতে চাওয়া হচ্ছে, যাঁরা কাজ করতে আগ্রহী।” সিপিএমের বিমলবাবুরও বক্তব্য, “এটা একটা অরাজনৈতিক ভোট। সমিতির স্বার্থেই আলোচনার মাধ্যমে এই প্যানেল তৈরি করা হয়েছে। এই সমিতিকে এখনও রাজনীতি গ্রাস করতে পারেনি।” তৃণমূলের গিরীন্দ্রনাথবাবুর কথায় একই সুর। তিনি বলেন, “কৃষকদের হয়ে লড়াই করতে চাই। তাই করতে গিয়ে আমরা কাজের লোক খুঁজছি। আর সেক্ষেত্রে তৃণমূল-সিপিএম বলে কাউকে চিহ্নিত করা হয়নি।”
তবে এই ভাবে মিলেমিশে লড়াইয়ের সিদ্ধান্তকে দুই দলেরই জেলা নেতৃত্ব মেনে নেননি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, “কী ভাবে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সিপিএমের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নির্বাচনে যোগ দিলেন, তা আমি ব্লক নেতৃত্বের কাছ থেকে জানতে চেয়েছি। রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” সিপিএমের নবদ্বীপ জোনাল কমিটির সদস্য প্রবীর মিত্র বলেন, “ওই সমবায় সমিতির ভোটে যে সিপিএম এবং তৃণমূলের প্রার্থীরা মিলেমিশে প্যানেল তৈরি করেছেন, তা কখনওই দলের সিদ্ধান্ত নয়। স্থানীয় ভাবেই ওই সমিতির উন্নয়নের স্বার্থে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ওই কর্মীদের দাবি।” পুণ্ডরীকাক্ষবাবুর অবশ্য বক্তব্য, “ওই এলাকায় নিজেদের মধ্যে দলাদলির কারণে রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতটি আমাদের হাত ছাড়া হয়েছে। তাই ওখানকার ভোটারদের কাছে আমরা আবেদন করছি যে, যে প্যানেলকেই তাঁরা ভোট দেবেন, যেন কেবল তৃণমূল প্রার্থীদেরই ভোট দেন।” গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে নেপালবাবু ওই পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তারপরে অনাস্থায় হেরে যান তিনি। এর আগে কৃষ্ণগঞ্জের খালবোয়ালিয়ার একটি সমবায় সমিতিতে নির্বাচন না করে স্থানীয় তৃণমূল ও সিপিএম নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কমিটি গঠন করেছিলেন। ওই কমিটিতে দুই দলেরই নেতাকর্মীরা ছিলেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.