ভারতের মাটিতে পাকিস্তানের সংক্ষিপ্ত এই সফর দু’দেশের ক্রিকেট সম্পর্ক পুরোপুরি জোড়া লাগাতে পারবে বলে মনে করছেন ওয়াঘার এ পার, ও পারের অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটারই। জাহির আব্বাসের মতো কেউ কেউ আবার এখন থেকে নিয়মিত সিরিজ চান দু’ দেশের মধ্যে।
বিষেণ সিংহ বেদী থেকে জাহির আব্বাস। আব্বাস আলি বেগ থেকে জাভেদ মিয়াঁদাদ। দু’দেশের অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটারই সোমবার নয়াদিল্লিতে নেওয়া বোর্ডের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। আর গৌতম গম্ভীর সাফ বলে দিয়েছেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ বলে আলাদা কোনও স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আমরা খেলব না। ভারত যেমন অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে খেলে, এটাও তেমনই একটা আম্তর্জাতিক সিরিজ হবে আমাদের কাছে।”
‘ভারত-পাকিস্তান দু’দেশেরই সঠিক লক্ষ্যে এগোনোর পথে এটা খুব ভাল একটা পদক্ষেপ,” বলেছেন বেদী। ১৯৭৮-এ এ রকমই বহু বছর বাদে ভারত-পাক ক্রিকেটীয় সম্পর্ক পুনর্স্থাপন হওয়ার সিরিজে ভারতীয় দলের অধিনায়ক বেদী আজ আরও বলেছেন, “আমার কাছে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল, পাকিস্তান ওদের হোম সিরিজ খেলবে ভারতের মাটিতে! দু’দেশের কাছেই এর অর্থ বিরাট। তিন ম্যাচের ছোট্ট ওয়ান ডে সিরিজটা নিয়েও যে পরিমাণ আগ্রহ তৈরি হবে আর দু’দেশের মধ্যে যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে সেটার কোনও মাপজোখ অসম্ভব। সিরিজটা থেকে প্রচুর ইতিবাচক ব্যাপার বেরিয়ে আসবে।”
|
জাহির আব্বাসেরও মূল বক্তব্য, আসন্ন ওয়ান ডে সিরিজ দু’দেশের টানাপোড়েনের সম্পর্কের প্রভূত উন্নতি ঘটাবে। “এই দু’টো প্রতিবেশী দেশের মধ্যে টেনশন কাটানোর সেরা পথ হল নিজেদের মধ্যে নিয়মিত ক্রিকেট খেলা। তাতে এই দু’টো দেশ অন্তত খেলা দেখতে ব্যস্ত থাকবে,” তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করে জাহির আরও যোগ করেছেন, “আমার মতে প্রতি বছর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সিরিজ হওয়া দরকার। ক্রিকেট এবং দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক, দু’টো জিনিষেরই তার ফলে উন্নতি ঘটবে।”
আব্বাস আলি বেগ আবার বলছেন, “ভারত-পাকিস্তান দু’দেশের সাধারণ মানুষ এর ফলে সবচেয়ে খুশি হবে। ভারত-পাকিস্তান দু’টো দেশই বিশ্ব ক্রিকেটের দুই বৃহৎ শক্তি। নিজেদের মধ্যে খেললে দু’দেশের ক্রিকেটেরই উন্নতি ঘটবে।”
প্রাক্তন পাক অধিনায়ক জাভেদ মিয়াঁদাদ পাক বোর্ডের অন্যতম কর্তা হিসেবেও নিজের মতামত রেখেছেন। বলেছেন, “আমি বিশেষ ভাবে খুশি, কেননা আমি জানি আমাদের বোর্ডের চেয়ারম্যান ভারত-পাক ক্রিকেটীয় সম্পর্ক জোড়া লাগানোর জন্য কী অপরিসীম চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন এত দিন ধরে। ভারত-পাক ক্রিকেট চালু হওয়া মানে ক্রিকেটবিশ্বেরই ভাল হওয়া।” আসিফ ইকবাল অবশ্য একটু অন্য রকম ভাবছেন। “আমি খুশি যে অবশেষে দু’দেশের মধ্যে আবার ক্রিকেট ম্যাচ হবে। তবে এখনও সিরিজের অনেক দিন দেরি আছে। তার আগে না আবার কোনও ব্যাপার নিয়ে দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক গরম হয়ে ওঠে! এই ভয়টা কিন্তু আমার আছে।”
তবে পিসিবি প্রধান জাকা আশরাফের কথায় আস্থা রাখলে আসিফদের আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। আশরাফ বলেছেন, “ডিসেম্বরের সিরিজ দু’দেশের সম্পর্কের হিমশৈল গলানোর কাজ শুরু করবে। আর এক বার বরফ গলা মানেই তো শুধুই শীতল জল বয়ে চলা!” |