প্রায়দিন স্কুলে গরহাজির থাকেন প্রধান শিক্ষক। হঠাৎ কোনও দিন এলেও পৌঁছন দেরিতে। প্রধান শিক্ষক উপস্থিত না-থাকায় সুযোগে সহশিক্ষকরা স্কুলে এসে ঠিকমতো ক্লাস নেন না। ওই অভিযোগ তুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কমনরুমে আটকে তালা ঝুলিয়ে দিলেন ছাত্র-ছাত্রী সহ অভিভাবকদের একাংশ। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরেরর তুলসিহাটা হাই স্কুলে শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। এদিনও স্কুলে হাজির ছিলেন না প্রধান শিক্ষক। তালা ঝোলানোর পরে শুরু হয় বিক্ষোভ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। দেড় ঘন্টা পরে শিক্ষকরা মুক্ত হন। যদিও ছাত্র ও অভিভাবকদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ পাল। তিনি বলেন, “আমি নিয়মিত স্কুলে যাই না বলে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা ঠিক নয়। স্কুলের কাজে ডিআই অফিস সহ বিভিন্ন দফতরে যেতে হয়। স্কুলে করনিক না-থাকায় সেই কাজ শিক্ষকদের করতে হচ্ছে। ফলে অনেক সময় ক্লাস ব্যহত হয়। যাইহোক ওই ঘটনা যেন না ঘটে দেখব।” ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা আড়াই হাজার। শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন ৩০ জন। অধিকাংশ দিন প্রধান শিক্ষককে স্কুলে পাওয়া যায় না। যেদিন আসেন সেদিনও দুপুর ১২টার আগে স্কুলে পৌছতে পারেন না। অন্য শিক্ষকরা স্কুলে গেলেও একাংশ ক্লাসে না-গিয়ে টিচার্স কমনরুমে বসে সময় কাটান। এ দিনও শিক্ষকরা টিচার্স কমনরুমে বসেছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনা দেখে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা ক্ষেপে যায়। শুরু হয় বিক্ষোভ। এর পরে টিচার্স কমনরুমে বসে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে আটকে রাখা হয়। ছাত্র ও অভিভাবকের অভিযোগ, ওই স্কুলের এক সময় যথেষ্ট সুনাম ছিল। পঠন-পাঠনের মান ভাল ছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের জন্য স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ লাটে উঠেছে। অভিভাবকদের কয়েকজন জানান, প্রধান শিক্ষক একটি ইটভাটার মালিক। ব্যবসার কাজে বেশি ব্যস্ত থাকেন। স্কুলের পরিচালন সমিতির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুন মাসে। পরিচালন সমিতির প্রাক্তন সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, “আগেও কয়েকবার প্রধান শিক্ষককে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ বলতে কিছু নেই। অনেক চেষ্টা করেও পরিস্থিতি পাল্টাতে পারিনি।” |