বোনকে মোটরবাইকে করে স্কুলে পৌঁছে ফেরার সময়ে গুলিবিদ্ধ হলেন এক তরুণ। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার বন্দর এলাকার রায়গঞ্জের টেন ক্লাস গার্লস হাইস্কুলের সামনে। অভিভাবকদের অভিযোগ, ওই স্কুলের সামনে প্রায়ই ছাত্রীদের উত্যক্ত করার ঘটনা ঘটে। তাই ঘটনায় আতঙ্কিত তাঁরা। পুলিশ জানায়, জখমের নাম সুমন দত্ত (১৮)। বাড়ি রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ এলাকায়। সুমন মাড়াইকুড়া ইন্দ্রমোহন হাই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র এবং কেটারিংয়ের ব্যবসা করেন। তাঁকে প্রথমে রায়গঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিভাবকদের একাংশের সন্দেহ, স্কুলের সামনে যে দুষ্কৃতীরা আড্ডা জমায়, তাদেরই কেউ সুমনকে গুলি করেছে। পক্ষান্তরে, এলাকার বাসিন্দাদের কয়েকজনের দাবি, সুমনের এক ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার জেরেই এই ঘটনা। সুমন অবশ্য বলেছেন, “কী কারণে গুলি করা হল তা বলতে পারব না। পুলিশই তদন্ত করে বের করুক।” |
রায়গঞ্জের ডিএসপি সালিমা লামা বলেন, “ইভটিজিংয়ের জেরে নাকি ত্রিকোণ প্রেম সংক্রান্ত বিবাদে সুমনকে গুলি করা হয়েছে তা দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই সব জানা যাবে।” ঘটনার পরে স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নমিতা দে জানান, স্কুলে এ দিন পঞ্চম ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের নবীন বরণের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের পরে জানতে পারি একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তার দাদা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রধান শিক্ষিকার অভিযোগ, স্কুল সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিন দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য চলছে। তাঁর দাবি, “আমরা দীর্ঘদিন আগেই পুলিশের কাছে স্কুল চলাকালীন নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি। পুলিশকর্মীরা কিছ ুদিন সাদা পোশাকে নজরদারি চালিয়েছেন। এ দিনের ঘটনার পর ফের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানানো হচ্ছে।” স্কুলের শিক্ষাকর্মীদের অনেকেই অভিযোগ করেন, রোজই ছাত্রীদের উত্যক্ত করার ঘটনা ঘটে এবং কেউ প্রতিবাদ করলে গুলি করে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়। একজন শিক্ষাকর্মী বলেন, “মাঝেমধ্যেই বেপরোয়া যুবকেরা ক্লাসের মধ্যে চিঠি ছুড়ে দেয়। যাতায়াতের সময়ে বিরক্ত করে। কিছু বললে মারার হুমকি দেওয়া হয়।” ডিএসপি জানান, স্কুল সংলগ্ন এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। সুমনের বাবা অশোকবাবু বছর বারো আগে মারা যান। মা বন্দনাদেবী রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে আয়ার কাজ করেন। হাসপাতালে সুমন বলেন, “বোন আগে সাইকেলে যেত। ইদানীং আমি ওকে বাইকে পৌঁছে দিতাম। ওকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিলাম। সেই সময় এক দল দুষ্কৃতী আমাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। আমার সঙ্গে কারও শত্রুতা বা গোলমাল ছিল না। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।” রায়গঞ্জ হাসপাতালে সুমন। |