রাস্তা তৈরিতে বরাদ্দ টাকার ৫ শতাংশ না দেওয়ায় প্রথমে হুমকি। তাতেও কাজ না হওয়ায় শ্রমিকদের মারধর, জিনিসপত্র লুঠ করে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধের অভিযোগ উঠেছে কয়েক জনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে মিনাখার মালিআড়ি গ্রামের ঘটনা। এ ব্যাপারে ঠিকাদার সংস্থার ম্যানেজার মিনাখা থানায় চার জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই চার জনের সঙ্গে তৃণমূলের এক নেতাও আছেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবন ডেভলপমেন্ট দফতরের আর্থিক সহযোগিতায় মাস পাঁচেক আগে মিনাখা থানার পাশ থেকে মালিআড়ি গ্রামের প্রাথমিক স্কুল পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরু হয়। কাজের বরাত পান কৃষ্ণনগরের জগবন্ধু ঘোষ। বর্তমানে ৪ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। অভিযোগ, রাস্তার কাজ শুরু হতেই এলাকার কিছু দুষ্কৃতী একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে রাস্তার কাজে বরাদ্দ টাকার ৫ শতাংশ দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় ঠিকা শ্রমিকদের হুমকি দেওয়া হত বলে অভিযোগ। মাস খানেক আগে ঠিকাদার সংস্থার পক্ষ থেকে বিধায়ক, বিডিও, পঞ্চায়েত প্রধান এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি।
এ দিন সকালে অন্তত ৫০ জন শ্রমিক নিয়ে রাস্তার কাজে যান ঠিকাদার সুবল গড়াই। অভিযোগ, কিছুক্ষণ পরেই ৮-১০ জন মোটরবাইকে এসে কাজ বন্ধের হুমকি দেয়। তাঁদের দাবি, টাকা মেটানো না হলে রাস্তার কাজ করতে দেওয়া হবে না। এরপরেও কাজ করতে যাওয়ায় কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কেড়ে নেওয়া হয় শ্রমিকদের হাতুড়ি, বেলচা-সহ অন্য সরঞ্জাম। আহতেরা হাসপাতালে গেলে সেখানে তাঁদের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
সুবলবাবুর অভিযোগ, তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতার অনুগামী কয়েকজন তাঁর কাছে রাস্তা তৈরিতে বরাদ্দ টাকার ৫ শতাংশ দাবি করেছে। টাকা না দেওয়ায় প্রথমে শ্রমিকদের হুমকি আর পরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি প্রশাসনে আগে জানানো হয়েছিল। এ দিন থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ঠিকাদার সংস্থার মালিক জগবন্ধু ঘোষ বলেন, “কাজ করতে গেলে যদি শ্রমিকদের মারধর করে সরঞ্জাম কেড়েই নেওয়া হয় তা হলে রাস্তার কাজ কি ভাবে শেষ হবে! শ্রমিকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করা পযর্যন্ত কাজ করা যাবে না।”
মিনাখাঁর বিডিও গৌরমোহন হালদার বলেন, “কিছু লোক রাস্তার কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ দিন ঠিক কী হয়েছে জানি না। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।”
এ ব্যাপারে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল বলেন, “আমাদের দলের নেতার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। রাস্তার কাজ বন্ধের খবর পেয়ে আমিই পুলিশকে বলেছি ঠিকাদারের লোকজনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে কাজ শেষ করতে।” |