নারায়ণগড়ে অভিযুক্ত তৃণমূল |
মিড-ডে মিলের খাবার ছড়িয়ে নষ্ট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মিড-ডে মিলের রান্না করা খাবার ছড়িয়ে দিয়ে স্কুলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর অভিযোগ উঠল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার এই ঘটনা ঘটে নারায়ণগড় থানা এলাকার বড়ামারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দোকান থেকে টিফিন কিনে ছাত্রছাত্রীদের খাইয়ে বাড়ি পাঠান স্কুলের প্রধান শিক্ষক সনাতন মুর্মু। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, “স্কুল চলাকালীন স্কুলের পাশ দিয়ে একটি মিছিল যাচ্ছিল। মিছিলের কয়েক জন স্কুলেও ঢোকে। বারণ করায় বেরিয়েও যায়। মিছিল শেষে হঠাৎ কয়েক জন ফের স্কুলে ঢোকে। কী রান্না হচ্ছে তা জানতে চায়। তা নিয়ে স্ব-সহায়ক দলের সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাধে। তার পরেই রান্না করা খাবার ছড়িয়ে দেয়।” থানায় খবর দেওয়ায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছয়। তখন অবশ্য স্কুলে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকেরা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। |
|
ছড়িয়ে রয়েছে খাবার। নিজস্ব চিত্র। |
এই ঘটনায় হতবাক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। কারণ, এ ভাবে স্কুলে ঢুকে তর্ক-বিতর্ক বা মিড-ডে মিলের রান্না করা খাবার ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা কখনও ঘটেনি। টিফিনের সময়ে যে খাবার খাওয়ার জন্য উৎসুক ছিল ছাত্রছাত্রীরা, তাদের চোখের সামনেই সেই খাবার ছড়িয়ে ফেলায় বাচ্চারা বিস্মিত। অভিযোগ, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে। একটি দল জোর করে গ্রামের এক বর্গাদারের জমি দখল করতে চেয়েছিল। অন্যদল তা দখলমুক্ত করতে গিয়েছিল। তা নিয়েই বিবাদ। স্থানীয় তৃণমূল-সংখ্যালঘু সেলের নেতা শেখ শেরিফের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরেই একটি জমি পড়েছিল। যে জমিটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের খেলার মাঠ করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন পুরনো তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাই সেখানে একটি তৃণমূলের ঝান্ডাও পোঁতা ছিল। শুক্রবার সিপিএম থেকে আসা নব্য-তৃণমূলীরা সেই ঝান্ডা তুলে জমিটি এক ব্যক্তিকে দখল দেওয়ার চেষ্টা করে। তাতেই বিরোধ বাধে। তখন নব্য-তৃণমূল সমর্থকেরা পিছু হটে স্কুলে গিয়ে তাণ্ডব চালায়।” তৃণমূলের নারায়ণগড় ব্লকের সভাপতি সূর্য অট্টের আবার দাবি, “যে বর্গাদারের জমিটি পড়েছিল তাদের কেউ গ্রামে থাকেন না। কে বা কারা সেই জমিতে তৃণমূলের পতাকা পুঁতে দেয়। দলেরই কিছু ছেলে প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিল। এ ভাবে দলের নামে কেউ জমি দখল করতে পারবে না বলায় কিছু লোকের স্বার্থে আঘাত হয়। তখনই ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সেই সময়ে ছুটে পালাতে গিয়ে মিড-ডে মিলের ভাতের হাড়ি উল্টে গিয়েছিল বলে শুনেছি।” উল্টোদিকে শেরিফদের অভিযোগ, “এলাকায় অশান্তি ছড়াতেই সিপিএম থেকে আসা নব্য-তৃণমূলীরা এ রকম কাজ করছে। বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।”
স্কুলের সামনের জমিকে ঘিরে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ থেকে স্কুলের ছোট ছেলেমেয়েদের চোখের সামনে ভাত, তরকারি ছড়িয়ে ফেলার ঘটনায় এলাকার মানুষও ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, ছোট্ট-ছোট্ট ছেলেমেয়েরা এর থেকে কী শিখবে! |
|