দূষণ রুখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটুলি স্টেশন সংলগ্ন আটটি গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, স্থানীয় একটি চালকল থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে এলাকায়। ৩ বছর ধরে প্রশাসনকে বিষয়টি বারবার জানানো সত্ত্বেও দূষণ রোধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদিও দূষণের কথা অস্বীকার করেছেন চালকলের মালিক স্বপন সাহা। তাঁর বক্তব্য, “কিছু লোক ষড়যন্ত্র করে চালকলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এলাকা দূষিত হওয়ার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি।”
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা একটি দীর্ঘ চিঠিতে পাটুলি স্টেশন বাজার এলাকা ও পীলা, সন্তোষপুর, পাটুলি, নারায়ণপুর, কাঁকনাইল, শ্রীরামপুর ও ছাতনী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, পূর্বস্থলী ব্লক অফিসের ঢিল ছোড়া দূরত্বে একটি চালকল রয়েছে। সারা দিন ধরে সেখান থেকে এলাকায় ছাই উড়ে বেড়ায়। দরজা, জানলার ফাঁক দিয়ে সেই ছাই ঢুকে পড়ে ভিতরে। পানীয় জল থেকে খাবার, সব কিছুতেই মিশে যাচ্ছে ওই ছাইয়ের গুঁড়ো। বাসিন্দাদের দাবি, এর ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এলাকার শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা। দূষণ থেকে বাঁচতে বেশির ভাগ সময়েই ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে তাঁদের। জনবহুল পাটুলি স্টেশন বাজার সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে রেলস্টেশন, ব্যাঙ্ক, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, জুট কর্পোরেশনের দফতর ছাড়াও বিভিন্ন স্কুল। প্রতিদিন সেখানে যেমন বহু মানুষের আনাগোনা চলে, তেমনই দূর-দূরান্ত থেকে আসে খুদে পড়ুয়ারা। দূষণে তাদের স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ছাইয়ের গুঁড়ো ঢুকে যাচ্ছে নাকে-মুখে, চোখে। সারা দিন চোখ জ্বলতে থাকে। রাস্তায় চলা ফেরা করতেও অসুবিধা হয়। ৪০৪ জন বাসিন্দার স্বাক্ষর সংবলিত ওই চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, চালকলে লোডশেডিং হলেই জেনারেটরের শব্দে বয়স্ক ব্যক্তিরা হৃদযন্ত্রের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন সরকারি দফতরে সমস্যাটি জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও দফতরই বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় এ বার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। বাসিন্দাদের তরফে দেবাশিস শীল, আনন্দগোপাল মণ্ডল, জীতেন্দ্রনাথ মান্নাদের বক্তব্য, “ছাইয়ের গুঁড়োয় জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আশা করি, এ বার সমাধান সূত্র মিলবে।” মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি বাসিন্দারা ওই চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচিকেও। সুমিতাদেবী বলেন, “চিঠি পেয়েছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা খাদ্য নিয়ামক আধিকারিককে বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে।” |