|
|
|
|
|
ফতোয়া পঞ্চায়েতের |
রাস্তায় মুখ ঢেকে, বারণ মোবাইলও
নিজস্ব প্রতিবেদন |
|
প্রেম করে বিয়ে?
চলবে না।
একলা মেয়ের প্রকাশ্যে বার হওয়া মেনে নেওয়া হবে না। বয়স চল্লিশের কম হলে তো বাজারে যাওয়াই বারণ।
মোবাইলে গান শুনতে শুনতে পথ হাঁটা নিষিদ্ধ।
মাথা না ঢেকে দিনের আলোয় বেরোনোও চলবে না।
না মানলে? গ্রাম ছেড়ে চলে যাও অন্য কোথাও।
কোনও তালিবানি ফতোয়া নয়। উত্তরপ্রদেশের বাগপত জেলার আসারা গ্রামে মহিলাদের উদ্দেশে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে খাপ পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত কর্তাদের দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনেই এই ‘বারণ-নামা’। অধিকাংশ গ্রামবাসীই নাকি এর সঙ্গে সহমত। দেশের রাজধানী শহর দিল্লি থেকে এই আসারা গ্রামের দূরত্ব বড়জোর ৫০ কিলোমিটার। বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহের নির্বাচনী এলাকা এই বাগপত।
হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ-সহ উত্তর ভারতের নানা রাজ্যে খাপ পঞ্চায়েত ব্যবস্থা খুবই প্রচলিত। গ্রামের সমাজকর্তা এই পঞ্চায়েত। আইন প্রণয়নের অধিকার না থাকলেও সম্মান রক্ষায় খুনের আদেশ দেওয়া বা মেয়েদের উপর ফতোয়া জারি করে বারে বারে খবরের শিরোনামে এসেছে খাপ পঞ্চায়েত।
ফতোয়ার ঘটনার তদন্তে রামালা থানার পুলিশ কাল রাতে আসারা গ্রামে গিয়ে দু’জন খাপ সদস্যকে আটক করে। কিন্তু পুলিশের ওপরে চড়াও হয়ে তাঁদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
আসারার সমাজকর্তাদের কাণ্ড-কারখানা প্রকাশ হতেই হইচই পড়ে গিয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান মমতা শর্মা বলেছেন, রাজ্য সরকারের উচিত নির্দেশিকা জারি করে এই ফতোয়া বাতিল করা। নিন্দা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমও। তিনি বলেন, সাহস করে কেউ এই ফতোয়ার বিরোধিতা করলে তাঁর যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সে দিকে রাজ্য সরকারের নজর রাখা উচিত। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের কোনও দলই এই ফতোয়ার নিন্দা করেনি। উল্টে খাপ পঞ্চায়েতের সমর্থনেই কথা বলেছেন শাসক দল সমাজবাদী পার্টির নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী মহম্মদ আজম খান। তিনি বলেন, “সকলেরই বাক্-স্বাধীনতা রয়েছে। পঞ্চায়েতকে তাদের মতামত দেওয়া থেকে আটকানো যায় না। পঞ্চায়েত যদি তাদের মত মানতে কাউকে জোরাজুরি করে, কেবলমাত্র তখনই আইনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।” এমনকী পঞ্চায়েতের এই নির্দেশকে ফতোয়া বলতেও রাজি নন তিনি। তাঁর কথায়, “এটা গ্রামের কিছু লোকের সিদ্ধান্ত মাত্র।” |
|
|
|
|
|