চাঁদমারি সেতু
পুরনো সেতু সংস্কারের দাবি, রাস্তায় বাসিন্দারা
তিহ্যবাহী একটি সেতু সংস্কারের দাবি জানিয়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহে নামলেন এলাকাবাসী। আসানসোলের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে রেলপাড় এলাকার চাঁদমারি সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে রাজ্যের আইন ও বিচারমন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক মলয় ঘটক, আসানসোলের সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী ও আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই দাবিপত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
ছবি: শৈলেন সরকার।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নির্মিত হয় গাড়ুই নদীর উপরের এই সেতুটি। শোনা যায়, ওই সময় চাঁদামারি সুটিং রেঞ্জে যাতায়াতের জন্য ব্রিটিশ সৈনিকেরা এই সেতুটি বানিয়েছিলেন। এখন আসানসোল শহরের সঙ্গে সহজে যাগাযোগ করতে এই সেতুটি ব্যবহার করেন রেলপাড় এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দা। তাঁরা জানান, প্রায় সাত দশক পুরনো এই সেতুটির অবস্থা জরাজীর্ণ। লোহার পাত বসানো সেতুটির বেশিরভাগ জায়গাও ক্ষয়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নদীর উপরের খুঁটিগুলিও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুটি খুবই সংকীর্ণ। ফলে স্বছন্দে যাতায়াত করা যায় না। এমনকী স্কুটার, বা মোটরসাইকেল গেলে কাঁপতে থাকে সেতুটি। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে সেতুটি সংস্কার ও চওড়া করা হোক। আর এই দাবিতেই চাঁদমারি নাগরিক মোর্চা গঠন করে গণস্বাক্ষর অভিযানে নেমেছেন তাঁরা। স্থানীয় শবনম বানু বলেন, “নড়বড়ে সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় হয়। কিন্তু বাধ্য হয়েই যাতায়াত করি। নাহলে তিন কিমি বেশি ঘুরতে হয়।” অন্য এক বাসিন্দা মহম্মদ নৌসাদ বলেন, “সেতুটি এতটাই সংকীর্ণ যে একটা অ্যাম্বুলেন্সও ঠিকমতো যেতে আসতে পারে না। ফলে রোগী নিয়ে অনেক ঘুরে হাসপাতালে যেতে হয়।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আসানসোল পুরবোর্ড বামফ্রন্টের আমলে থাকাকালীনও এই সেতু সংস্কারের দাবি উঠেছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জুটেছিল শুধু আশ্বাস। আবার ২০০৯-এ পুর নির্বাচনের আগে বিরোধীরাও এই সেতুটিকেই নির্বাচনী হাতিয়ার বানিয়েছিলেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে আশ্বাস মিলেছিল যে পুরবোর্ড তাঁদের হলে তাঁরা সেতুটি সংস্কার করবেন। কিন্তু তিন বছর পেরোলেও সেই আশ্বাসই সার। অগত্যা উঠেপড়ে লাগলেন বাসিন্দারা। ওই ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর ওয়াসিমুল হক বলেন, “পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে নাগরিকদের এই দাবিটি একাধিকবার আলোচনা করেছি। কিন্তু আমার কথা কানে তোলা হচ্ছে না। অগত্যা নাগরিক মোর্চার দাবিকে সমর্থন জানিয়ে গণস্বাক্ষর অভিযানে নেমেছি।”
এই সেতু সংস্কার যে সত্যিই প্রয়োজনীয় সে কথা স্বীকার করেছেন পুরসভার ক্ষমতাসীন ও বিরোধী শিবিরের নেতারাও। বাসিন্দাদের দাবিকে সমর্থন করেছেন পুরসভার বিরোধী নেতা সিপিএমের তাপস রায়ও। তিনি বলেন, “যে কোনও দিন সেতুটি ভেঙে পড়লে বিপাকে পড়বেন বাসিন্দারা। জরুরী ভিত্তিতে এটির সংস্কার করা হোক।” তাপসবাবুর দাবি, সেতুটি সংস্কারের জন্য তাঁরা একটি প্রকল্পও বানিয়েছিলেন। কিন্তু পুরবোর্ডে ক্ষমতায় না আসায় প্রকল্পটি রূপায়ন করা সম্ভব হয়নি। শহরের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওখানকার মানুষের কথা ভেবে আমরা সেতুটি নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছি। সমস্যা সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নিচ্ছি।” সেতুটির জীর্ণদশার কথা জানেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের আইন ও বিচার মন্ত্রী মলয় ঘটক ও আসানসোলের সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীও। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরাও। সত্যিই বাসিন্দাদের দাবি সত্যিই পূরণ হয়, না কি আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতির ভারেই তা চাপা পড়ে যায়, তা-ই এখন দেখার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.