|
|
|
|
এস বি গড়াই রোড |
নেই উড়ালপুল, নাকাল পথিক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
যানজট ও মাল পরিবহণের জেরে আসানসোল শহরের পুরনো জি টি রোডের বিকল্প শশীভূষণ গড়াই রোডের নাভিশ্বাস অবস্থা। জোরদার হচ্ছে উড়ালপুলের দাবিও। আসানসোলের ডিআরএম জগদানন্দ ঝা বলেন, “শুনেছি লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে নানা সময়ে প্রচণ্ড যানজট হয়। এলাকাটি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অধীন। যা করার তারাই করবে।”
আসানসোল আদালত থেকে জেলখানার সঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের যোগাযোগের রাস্তা যেমন এটি, তেমনই পূর্ব রেল ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের মধ্যে অন্যতম সংযোগস্থলও এই রাস্তা। রয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও কেন্দ্রীয় জল কমিশনের দফতরও। সারাদিন ট্রেন ও মালগাড়ির যাতায়াতে লেভেল ক্রসিং এলাকায় যানজট একটি নিত্য দিনের ঘটনা। শুধু তাই নয়, রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকে দু’চাকার গাড়ি থেকে শুরু করে অন্য যানবাহন। আবার এই রাস্তার দু’পাশেই রয়েছে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে ১৬টি স্কুল ও একটি কলেজ। এ ছাড়াও আছে আসানসোল মহকুমা হাসপাতাল ও দু’টি নার্সিংহোম। বাসিন্দারা জানান, যানজটের জেরে আটকে থাকে অ্যাম্বুল্যান্সও। |
|
নিজস্ব চিত্র। |
মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে নাজেহাল অবস্থা হয় রোগীর পরিবারের। আসানসোল হাসপাতালের প্রবীণ চিকিৎসক শ্যামল সান্যালের কথায়, “হাসপাতালে যাওয়ার প্রধান রাস্তাই এটি। পড়ুয়া থেকে অফিস কর্মীদের চাপ প্রতিদিন বেড়েই চলছে। রাস্তার দু’পাশেও বহুতল আবাসন বাড়ছে দিনের পর দিন। বড় গাড়ি রাস্তায় ঢুকলেই যানজট আরও বাড়ে। ট্রেন তো আছেই, তার উপর বেআইনি দখলদারেরা রাস্তা আটকে রেখেছে।”
আসানসোল মেগাসিটি সিটিজেন ফোরামের সভাপতি বুলু চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রয়াত কাউন্সিলর দেবাশিস ঘটকের উদ্যোগে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের সঙ্গে আলোচনার পরে উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। রাস্তার সমস্যার সমাধানের জন্য প্রয়োজন হাটন রোড মোড় ও ইসমাইলের সংযোগস্থল, হাসপাতালের সামনে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ও কোর্ট লেভেল ক্রসিংয়ে একটি বড় উড়ালপুল। বুলুবাবু বলেন, “রাস্তাটি ৪০ ফুট প্রশস্ত। কিন্তু জবর দখলের জেরে বিভিন্ন অংশ সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে। বেআইনি দখলদারদের তুলতে হবে। কোর্টের অদূরে উপেন্দ্রনাথ স্কুল থেকে শুরু করে লেভেল ক্রসিং পর্যন্ত অংশটিই সব থেকে বেশি সরু হয়ে গিয়ছে। এই অংশেই উড়ালপুল করতে হবে।”
শ্যামলবাবুও বলেন, “রাস্তার দু’পাশে দীর্ঘক্ষণ গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধ করতে হবে। নির্দিষ্ট পার্কিং জোন চাই। স্কুলবাসগুলিকে সব সেন্ট স্প্যাস্টিক স্কুলের ভিতরের রাস্তা দিয়ে জি টি রোডমুখী করতে হবে। অবিলম্বে কোর্ট লেভেল ক্রসিংয়ে উড়ালপুলও তৈরি করতে হবে।”
আসানসোলের মেয়র পারিষদ অভিজিৎ ঘটকের অবশ্য দাবি, বাম পরিচালিত পুরবোর্ডের আমলে ওই রাস্তার দু’পাশে ন্যূনতম জায়গা ছেড়ে বহুতল নির্মাণ করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে কোর্ট লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে উড়ালপুল গড়ার কোনও জায়গা নেই। তাই বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে।”
রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক মলয় ঘটক বলেন, “রেল উড়ালপুল তৈরি করতে অধের্ক টাকা রেল ও অর্ধেক টাকা রাজ্য সরকারের দেওয়ার কথা। এই রাস্তায় উড়ালপুল গড়তে এর আগে রেল কর্তৃপক্ষ রাজি হলেও তৎকালীন বাম সরকার রাজি হয়নি। এখন রেলমন্ত্রীও আমাদের দলের, রাজ্যেও আমাদের সরকার। উড়ালপুল গড়ার ব্যাপারে আমরা উদ্যোগী হচ্ছি।” সিপিএমের আসানসোল জোনাল সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায় অবশ্য উড়ালপুল গড়ায় বাম সরকারের ‘অনীহা’র অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, “রেলমন্ত্রক, রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে আসানসোল পুরসভা, সবই তো এখন তৃণমূলের হাতে। ওরাই উড়ালপুল গড়ে দেখাক। এখনও তো উদ্যোগ কিছু চোখে পড়ছে না।” |
|
|
|
|
|