বর্ষার শুরুতেই ডায়েরিয়ার প্রকোপ শুরু হয়েছে ঝাড়গ্রাম ব্লকের সর্ডিহা অঞ্চলের শাঁখবান্ধি গ্রামে। গ্রামেরই দু’টি পাতকুয়োর জল দূষিত হয়ে যাওয়ায় এই বিপত্তি বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রের দাবি, গত রবিবার থেকেকমপক্ষে ২৫ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। গুরুতর অসুস্থদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। স্থানীয় মানিকপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’জন চিকিৎসাধীন। ৩ জনকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ও ৭ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে মালতী মাহাতো (২৫) নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়। ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মালতীদেবী কয়েকদিন আগে ভর্তি হলেও চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরে শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়।
শাঁখবান্ধির বাসিন্দাদের অভিযোগ, রবিবার থেকে ডায়েরিয়ার প্রকোপ শুরু হলেও স্বাস্থ্য দফতরের মেডিক্যাল টিম চারদিন পর, বৃহস্পতিবার গ্রামে আসে। মানিকপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও কর্মীরা এ দিন সকালে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বাধা পেয়ে চিকিৎসক দল ফিরে যায়। শেষ পর্যন্ত এ দিন বিকালে বিশাল পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝাড়গ্রামের সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (এসিএমওএইচ) ভূপতিনাথ মাঝি, ঝাড়গ্রামের বিডিও সুদীপনারায়ণ ওঝা, ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার মেডিক্যাল টিম নিয়ে শাঁখবান্ধিতে যান। ৫ জন শিশু-সহ জনা পনেরো রোগীর চিকিৎসা করা হয়। মহকুমাশাসকের নির্দেশে দু’টি পাতকুয়ো ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পাতকুয়ো দু’টির জলের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। আপাতত, পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে ট্যাঙ্কে করে গ্রামে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে।” শীঘ্রই ব্লক-প্রশাসনের উদ্যোগে সেখানে সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়ে স্থায়ীভাবে পরিশ্রুত জলের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন মহকুমাশাসক। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “ডায়েরিয়ায় মৃত্যুর খবর নেই। দূষিত জল পান করলে এবং রান্নায় ওই দূষিত জল ব্যবহার করলে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চিকিৎসার পাশাপাশি, বাসিন্দাদের পরিশ্রুত জল পান করতে হবে।” |