নির্দিষ্ট সময়ে বহির্বিভাগ না খোলা, কোনও বিভাগে চিকিৎসক না থাকা-সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে। তা রুখতে এ বার থেকে হাসপাতাল সুপার বা সরাসরি স্বাস্থ্য ভবনে এসএমএস করে অভিযোগ জানাতে পারবেন রোগী এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা। হাসপাতালের বহির্বিভাগে কখন কোন পরিষেবা মিলবে, চিকিৎসক এবং রোগীর লোকদের কী করণীয় সেই নির্দেশিকা লিফলেট আকারে ছাপিয়ে বুধবার থেকেই বিলি করছেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ওই লিফলেট পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের টিকিট কাউন্টার এবং রোগী সহায়তা কেন্দ্র থেকে রোগী এবং তাঁদের পরিবারের লোকদের হাতেও তুলে দেওয়া হচ্ছে। সেখানেই জানানো হয়েছে হাসপাতাল সুপারকে ৯৪৭৫৮১৬৩৭৭ বা সরাসরি স্বাস্থ্য ভবনে ৯৮৩৬৪৭৭৩৪২ মোবাইল নম্বরে ফোন বা এসএমএস করে অভিযোগ জানাতে পারবেন রোগীর লোকজন। হাসপাতাল সুপার প্রদীপ সরকার বলেন, “হাসপাতালের একটা নিয়ম রয়েছে। নিয়মিত বহির্বিভাগের সমস্ত পরিষেবা খোলা থাকবে। রোগী না থাকলেও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বহির্বিভাগে চিকিৎসকদের থাকতে হবে। আশা করি চিকিৎসকরা সহযোগিতা করবেন। সমস্যা হলে বাসিন্দারা যাতে আমাকে বা স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ জানাতে পারেন সে জন্য ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে।” কী বলা রয়েছে ওই নির্দেশিকায়? তাতে জানানো হয়েছে, সোমবার থেকে শনিবার মেডিসিন, শল্য বিভাগ, প্রসূতি বিভাগ, নাক-কান-গলা, শিশু বিভাগ, চর্ম বিভাগ এবং দন্ত চিকিৎসার বহির্বিভাগ খোলা থাকবে। চোখের বহির্বিভাগ সোম, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শুক্রবার খোলা থাকবে। অর্থোপেডিক বিভাগ খোলা থাকবে সোমবার, মঙ্গলবার, শুক্রবার এবং শনিবার। সোম থেকে শনিবার প্রতিদিন বেলা ৯টা থেকে ২টা পর্যন্ত বহির্বিভাগ খোলা থাকবে। ২৬ জানুয়ারি, ১৫ অগস্ট, দুর্গোপুজোর অষ্টমী-সহ বছরে ১০ দিন বিশেষ ছুটি হিসাবে বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে। ‘জেনেরিক’ নামে ওষুধ লিখতে বাধ্য থাকবেন চিকিৎসকরা। প্যাথলজির বিভিন্ন পরীক্ষা, এক্স-রে, ইসিজি হাসপাতালে করাতে যে টাকা দিতে হয় তার বিনিময়ে রোগী লোকদের রসিদ সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। মা, শিশু এবং নবজাতকের চিকিৎসা, পথ্য এবং ওষুধ নিখরচায় দেওয়া হবে হাসপাতাল থেকে। তাঁদের নিখরচায় যাতায়াতের গাড়িও মিলবে। বেলা ১১ টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত ২৭ নম্বর ঘরে চিকিৎসকরা রোগীর লোকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের কথা শুনবেন। সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া হাসপাতাল চত্বরে কোনও গাড়ি রাখা যাবে না। লিফলেট ছাপিয়ে হাসপাতাল সুপার অনিয়ম বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও বৃহস্পতিবার হাসপাতালের দোতলায় সাধারণ মেডিসিন বিভাগ বন্ধ ছিল। বেলা সওয়া একটার পর থেকে ৩৩ নম্বর ঘরে চিকিৎসক ছিলেন না বলে অভিযোগ। বহির্বিভাগ চলাকালীন মহিলাদের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসক মল্লিকা মুখোপাধ্যায়কে মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। চিকিৎসকদের ‘জেনেরিক’ নামে ওষুধ লিখতে বলা হলেও অনেকেই কোম্পানির ‘ব্র্যান্ড’-এর নামে ওষুধ লিখছেন। চিকিৎসক মল্লিকাদেবী দাবি করেন, রোগী না-থাকায় তিনি মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভের সঙ্গে কথা বলেছেন। হাসপাতাল সুপার জানান, বহির্বিভাগ চলার সময় কোনও মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ সেখানে যাবেন না বা চিকিৎসকরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন না। এ ব্যাপারে কড়া নির্দেশ রয়েছে। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন। তাই ওই বিভাগ বন্ধ। তবে রোগীদের পুরুষ এবং মহিলা মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। |