বর্ষার শুরুতেই বেশ কিছু ওয়ার্ডে জল জমতে শুরু করায় কপালে ভাঁজ বহরমপুরের। পুরসভা অবশ্য নাগরিকদের কোনও আশার বাণী শোনাতে পারেনি। কেননা পুর-এলাকার জল শহরের বাইরে বের হয় যে পাঁচটি খালের মধ্য দিয়ে সে গুলির প্রায় বুজে এসেছে।
গোর্বধননালা, বিবিগঞ্জ, বড় মুড়ি, ওসমানখানি, লক্ষ্মীজোলা খাল সংস্কারের দায়িত্ব রয়েছে সেচ দফতরের উপরে। সঠিক সময়ে ওই খাল সংস্কার না হওয়ায় বর্ষায় পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল দাঁড়িয়ে থাকছে আর এ জন্য সেচ দফতরকেই দুষছে পুরসভা।
পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “শহরের নিকাশি ব্যবস্থা খারাপ নয়। কিন্তু যে ৫টি নালা দিয়ে শহরের জল বাইরে বের হয়, সঠিক সময়ে সেই নালাগুলি সংস্কার না করার জন্যই পুর-এলাকার এই হাল। এ ব্যাপারে সেচ দফতরকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি।” তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ওই খাল সংস্কার না করার ফলে জলধারণ ক্ষমতাই কমে গিয়েছে খালগুলির। জল নামতে দেরী হওয়ায় বিভিন্ন নর্দমা উপচে জল রাস্তায় জমে থাকছে। এ দিকে সামান্য বৃষ্টিতেই বহরমপুর পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্তত এহারোটি ওয়ার্ডে জল জমতে শুরু করেছে। জল নামতে ঘম্টা ঘুরে যাচ্ছে। কোনও কোনও ওয়ার্ডে আবার জমে থাকা নোংরা-দূষিত জল নর্দমা উপচে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যাওয়ার মত ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে পুরবাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষুব্ধ। বাসিন্দারা কখনও স্থানীয় কাউন্সিলর বা পুরপ্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। এতে পুর-কর্তৃপক্ষের অবশ্য কোনও হেলদোল নেই।
একই ভাবে বহরমপুরের গির্জার মোড়, সতিমার গলি, ইন্দ্রপ্রস্থ, খাগড়া, কাশিমবাজার ও সৈয়দাবাদ এলাকার বিভিন্ন গলি-রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে থাকে। পুরপ্রধান বলেন, “খাগড়া এলাকার জমা জল যেমন চাতরা বিল হয়ে বিষ্ণুপুর বিলে গিয়ে পড়ে। সেখান থেকে এন্ডিকা বিল হয়ে ভাণ্ডারদহে চলে যায়। কিন্তু চাতরা বিল, বিষ্ণুপুর বিল মাছ চাষের জন্য মৎস্য চাষিদের লিজে দেওয়া হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক জল বয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বর্ষার সময়টুকু বাদ দিয়ে বাকি সময় ওই লিজ দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রশাসনকে জানাই। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।”
এই অবস্থায় সেচ দফতর (বহরমপুর ডিভিশন) ওই ৫টি নালা সংস্কারের জন্য ৩০ লক্ষ টাকার দরপত্র ঘোষণা করেছে। কিন্তু দরপত্র ঘোষণার পরে ওয়ার্কঅর্ডার ইস্যু করে কাজ শুরু হতে বর্ষা নেমে যাবে। কাজ শুরু করা নিয়েই সংশয় রয়েছে। সেচ দফতরের (বহরমপুর ডিভিশন) নির্বাহী বাস্তুকার সুজিত বোস বলেন, “গত বছরও ওই নালাগুলি সংস্কার করা হয়েছে। এ বছরও গোবর্ধন খাল-সহ বেশ কিছু খাল সংস্কারের জন্য ৩০ লক্ষ টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। টেন্ডারের পরে ওয়ার্কঅর্ডার দিয়ে অবিলম্বে কাজ শুরু হবে। দেখা যাক কতটা সুবিধা নাগরিকদের দেওয়া যায়!” |