জাতীয় স্তরের অ্যাথলিট পিঙ্কি প্রামাণিককে নিয়ে টানাহেঁচড়ার বিরুদ্ধে আগেই সরব হয়েছে রাজ্য মহিলা কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশন। এ বার সরব হল জাতীয় মহিলা কমিশনও। পিঙ্কির সঙ্গে পুলিশ ও কারাকর্মীরা যে-ব্যবহার করেছেন, তা ‘অন্যায়’ বলে মনে করছে তারা। এ ব্যাপারে নজর না-দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকেও দুষছে ওই কমিশন। পুরো বিষয়টির তদন্তের জন্য তারা একটি পরিদর্শকদল পাঠাচ্ছে রাজ্যে।
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন মমতা শর্মা বলেন, “পিঙ্কি আমাদের দেশকে অনেক সম্মান এনে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যে-ব্যবহার করা হয়েছে, তা অন্যায়। জেলে এবং পুলিশের কাছ থেকেও তিনি দুর্ব্যবহার পেয়েছেন। এ ব্যাপারে সরকার কোনও নজর দেয়নি, এটা খুবই খারাপ।” |
জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “কমিশন যা বলেছে, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।” মন্ত্রী জানান, ঘটনাটি সল্টলেক পুলিশ কমিশনারেট এলাকার। সেখানকার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, পিঙ্কির সঙ্গে কেউ খারাপ ব্যবহার করে থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিঙ্কির সঙ্গে অবশ্য আগেই দেখা করেছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যারা। ওই কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় বলেন, “জাতীয় মহিলা কমিশন আসছে, ভাল কথা। আমাদের কাছে পিঙ্কি অবশ্য কারাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। তবে নার্সিংহোমে তাঁর হাত-পা বাঁধা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন। যে-এমএমএস বাজারে ছড়িয়েছে, তা নিয়েও অভিযোগ করেছেন পিঙ্কি।”
বাগুইআটির এক মহিলা ধর্ষণ, প্রতারণা-সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনেছেন পিঙ্কির বিরুদ্ধে। এ দিন বারাসত আদালতে পিঙ্কির বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের মামলার শুনানি ছিল। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আদালতে পৌঁছন পিঙ্কি। তাঁর পরনে ছিল নীল টি-শার্ট। তাঁকে দেখতে আদালতে ভিড় জমে যায়। ভিড় সামলাতে মোতায়েন করা হয় প্রচুর পুলিশও। এ দিন তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই স্বাভাবিক দেখাচ্ছিল পিঙ্কিকে। তবে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পিঙ্কি অবশ্য বলেন, “আমি একদমই স্বস্তিতে নেই। আমার উপর দিয়ে কী ঝড় বয়ে যাচ্ছে, আমিই জানি। এ বার সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনত কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা ভাবব।” আদালতে মামলা ওঠার পরে বারাসতের এসিজেএম অনিতা মাথুর জানিয়ে দেন, মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১০ অক্টোবর।
আদালত ৯০ দিন পরে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করল কেন? আইনজীবীদের ব্যাখ্যা, ধর্ষণের মামলায় তদন্তকারী অফিসারকে ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করতে হবে। আদালত চাইছে, ওই চার্জশিট জমা পড়ার পরেই মামলার বিচার শুরু হোক। পিঙ্কির আইনজীবী মাধব সান্যালও বলেন, “পুলিশ চার্জশিট জমা দিলে পিঙ্কির ডাক্তারি পরীক্ষা এবং অন্য সব রিপোর্টের প্রতিলিপি হাতে পাব। তার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” |