দুই পরিবারের বিবাদে জড়িয়ে পড়ে গোলমালে অভিযুক্ত তৃণমূল
পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে ঘটনা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। কিন্তু ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দল অব্যাহত। যার জেরে অশান্তি কমছে না গোঘাটের কোটা গ্রামে। দুই গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ বাধছে বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীরা জেরবার। আতঙ্কে লিখিত অভিযোগ না করলেও থানায় একাধিক বার টেলিফোনে ঘটনার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। বিবদমান পরিবারের লোকজনও একে অন্যের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ করেই চলেছেন। অতিষ্ঠ পুলিশও। আরামবাগের এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “গ্রামে অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালের ৩১ মে কোটা গ্রামের তরুণ পাল গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সদ্য বিধবা বধূর বাপের বাড়ির লোকজন অভিযোগ তোলেন, তরুণের ভাই তপন ‘জোর করে’ বউদির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করায় আত্মঘাতী হয়েছেন তরুণবাবু। মেয়েকে তাঁরা স্থায়ী ভাবে বাপের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেত চান। এই নিয়ে দুই পরিবারে টানাপোড়েন শুরু হয়।
চলতি বছরের ৪ জুলাই গ্রামের সালিশিতে ঠিক হয়, মেয়েকে তরুণবাবুর পরিবারের তরফে এক বছরের মধ্যে তিন কিস্তিতে ৪ লক্ষ টাকা দিতে হবে। বধূর শিশুকন্যার নামে ৫০ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে জমা রাখতে হবে এক মাসের মধ্যে। জীবনবিমার যাবতীয় কাগজপত্র বধূকে দিতে হবে বলেও ঠিক হয়। বিয়ের সমস্ত যৌতুক নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের রেজনা গ্রামে বাপের বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন ওই বধূ। মাঝে মধ্যে আলোচনার দিন ঠিক হলে আসতেন।
বছর খানেক আগে তিনি আবার শ্বশুরবাড়িতেই থাকতে চেয়ে ফিরে এসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি শ্বশুরবাড়ির ভূ-সম্পত্তির ভাগ পাবেন। সে জন্যই ফেরা। কিন্তু তাঁকে সাময়িক ভাবেও থাকতে দিতে রাজি নন তপন পাল। এই গোলমালেই জড়িয়ে পড়েছে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লোকজন।
বিধবা মহিলার অভিযোগ, “শ্বশুরবাড়িতে থাকা আমার হক। তা ছাড়া, যে ৪ লক্ষ টাকা আমাকে দেওয়া হবে বলা হয়েছিল, তার পুরোটা পাইনি।” অন্য দিকে, বধূর দেওর তপনবাবু বলেন, “সমস্ত টাকা-সহ যাবতীয় প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়েছে। বউদি চলে যাওয়ায় সম্পত্তি আমাকে লিখে দিয়েছেন বাবা। আমার বাড়িতে এখন বউদিকে থাকতে দিতে যাব কেন?”
বধূ ও তাঁর পরিবারের পক্ষে থাকা স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাবলু সাঁতরা বলেন, “ওই বধূ শ্বশুরবাড়িতেই থাকবেন। কিন্তু থাকতে দিচ্ছেন না তপনবাবু। তাঁর পক্ষ নিয়ে আমাদেরই দলের এক নেতা রূপচাঁদ মাল ও তাঁর অনুগামীরা সন্ত্রাস চালাচ্ছেন।” রূপচাঁদবাবুর আবার বক্তব্য, “অন্যায় ভাবে তপন পালের বাড়ি দখল করেছে বাবলু। ভাঙচুর, লুঠপাট নিয়মিত চলছে। তপন পাল ঘরছাড়া। তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা, মূক-বধির দিদির উপরেও অত্যাচার শুরু হয়েছে।”
গত বছর মে মাসে শ্বশুরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন ওই বধূ। বৃদ্ধ শ্বশুর জগন্নাথ পাল দিন কুড়ি জেলও খাটেন। তার আগে তপনবাবু বধূর বিরুদ্ধে ঘর ভাঙচুর, লুঠপাটের অভিযোগ দায়ের করেন। দু’টি মামলাই আদালতে বিচারাধীন।
পারিবারিক বিবাদে দুই গোষ্ঠীর নেতাদের জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন পাল বলেন, “গ্রামগত ভাবেই আমাদের দলের ছেলেরা পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে থাকতে পারে। এর সঙ্গে দল যুক্ত নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.