|
|
|
|
বিহারে নিখোঁজ শিলচরের প্রীতম, তদন্ত শুরু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
ব্যাগে ছিল তার মার্কশিট, একটি ডিজিট্যাল ক্যামেরা। সেই ব্যাগটি নিয়ে পালাচ্ছিল চার যুবক। আর তাদের তাড়া করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত বিহার থেকে নিখোঁজ হয়ে গেলেন অসমের শিলচরের বাসিন্দা প্রীতম ভট্টাচার্য। সোমবারের এই ঘটনার পরে প্রীতমের কাকা রামমোহন ভট্টাচার্য আজ ভাগলপুরের নওগাছিয়া স্টেশনে জিআরপি-র কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। গুয়াহাটি স্টেশনেও তাঁরা একই অভিযোগ জানিয়েছেন। আজ প্রীতমের কাকা এডিজি (সদর) রবীন্দ্র কুমারের সঙ্গে পটনায় এসে দেখাও করেন। রবীন্দ্র কুমার বলেন, “আমি আইজি-রেলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। এই নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাইছি না।”
প্রীতমের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, পিএইচডি-র নাম নথিভুক্তির জন্য সে অবধ-অসম এক্সপ্রেসে চেপে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পদার্থবিদ্যায় এমএসসি প্রীতমের ইচ্ছে ছিল, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার। প্রীতমের বাবা শঙ্কর ভট্টাচার্য শিলচর মহিলা কলেজের অবসর প্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
কাকা জানিয়েছেন, সোমবার গুয়াহাটি থেকে প্রীতম ট্রেনে ওঠে। এরপর নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে একই কামরায় (এস-১০) ওঠে চার যুবক। কাটিহার স্টেশনের পর থেকে ওই চার যুবক নওগাছিয়া স্টেশন পর্যন্ত যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিল। ট্রেনটি নওগাছিয়ায় পৌঁছনোর পরেই ওদের মধ্যে দু’জন প্রীতমের ব্যাগটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। সেই ব্যাগে ছিল প্রীতমের মার্কশিট, ক্যামেরা এবং জামাকাপড়। প্রীতম ওই যুবকদের বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাগটি নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। এরপরেই প্রীতম ট্রেন থেকে নেমে তাদের পিছু নেওয়ার চেষ্টা করেন। সামনে একজন পুলিশকে পেয়ে বাকি দুই যুবককে দেখিয়ে সে বলে, এদের লোকেরা তাঁর ব্যাগ নিয়ে পালিয়েছে। ওই পুলিশ কর্মী প্রীতমের কথায় আমল দেয়নি। এর মধ্যে ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। প্রীতম তাতে উঠতে পারেননি।
প্রীতমের কাকার কথায়: দুপুর দেড়টা নাগাদ প্রীতম ওই স্টেশনে দাঁড়িয়ে বাড়িতে ফোন করে মা উৎপলা ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর বাবার সঙ্গেও কথা হয়। তাঁদের সব ঘটনা সে জানায়। ওর মা প্রীতমকে বলেন, তুই উল্টোদিকের ট্রেন ধরে কাটিহারে চলে আয়। তারপর সেখান থেকে কোনও ট্রেন ধরে দিল্লি যা। ওখানে বেশিক্ষণ থাকার দরকার নেই। এরপর প্রীতম কাকা ও কাকীমার সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন। কাকা বলেন, “তিনটের সময় ফোন করে দেখা যায় প্রীতমের ফোনটি বন্ধ। ব্যস্ত ভেবে তখন আমরা আর মাথা ঘামাইনি। পরের দিনও ওর সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পেরে দিল্লিতে যে হোটেলে ওর ওঠার কথা ছিল সেখানে ফোন করি। হোটেলে না পৌঁছনোয় আমরা নড়েচড়ে বসি। কাটিহারের রেল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ফ্যাক্সে অভিযোগ পাঠাই। আজ নওগাছিয়ায় এসে আমি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।” রামমোহনবাবু বলেন, “আইজি রেল আমাকে ফোন করেছিলেন। পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, তাঁরা আশাবাদী।” কাটিহার রেলের পুলিশ সুপার সুখন পাসোয়ান বলেন, “প্রীতমকে নওগাছিয়া স্টেশনে শেষ দেখা গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তাঁর খোঁজে প্রতিটি রেল স্টেশনে ছবি-সহ খবর দেওয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় সমস্যা হচ্ছে।” নওগাছিয়ার জিআরপি ইন-চার্জ মনীশ কুমার বলেন, “আজ সকালে তাঁর কাকা এসে আমাদের কাছে প্রীতমের নিঁখোজের অভিযোগ দায়ের করেছেন। কাটিহার ডিভিশনের সমস্ত স্টেশনে তাঁর ছবি দিয়ে খবর পাঠানো হয়েছে। স্টেশনের মাইকেও প্রচার করা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|