একটু দূরেই নিরাপত্তার কড়া বেষ্টনী। তার মধ্যেই ভরসন্ধ্যায় বিমানবন্দর-চত্বরে খুন হয়ে গেলেন এক যুবক। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহত যুবক ফারহাদ (৩৪) বাংলাদেশি। তিনি মধ্যমগ্রামে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। মিস্ত্রির কাজ করতেন।
ফারহাদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেখ সেলিম আলি নামে এক যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে বিমানবন্দরের এক নম্বর গেটের কাছে বসে ছিলেন। সেলিমের সন্দেহ, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ফারহাদ অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত। সেলিম এ দিন স্ত্রীকে অনুসরণ করে এসে দেখেন, তিনি ফারহাদের সঙ্গে বসে আছেন। পুলিশ জানায়, বিমানবন্দরে নির্মাণকাজের জন্য অনেক লোহার রড পড়ে ছিল। তারই একটা তুলে নিয়ে পিছন থেকে ফারহাদের মাথায় আঘাত করেন সেলিম। আহত অবস্থায় ফারহাদকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ফারহাদকে আঘাত করার সময় সেলিমের স্ত্রী বাধা দিতে যান। তাঁর হাতেও রডের আগাত লেগেছে। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরেই অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রী এবং চার বছরের ছেলেকে নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার নীলগঞ্জ এলাকার থাকতেন সেলিম। সম্প্রতি কাজের সূত্রে মধ্যমগ্রামে বাড়ি ভাড়া করে সপরিবার থাকছিলেন। পুলিশকে সেলিম জানান, সেখানেই ফারহাদের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর আলাপ হয়। ৭ জুলাই বাড়ি ফিরে সেলিম দেখেন, স্ত্রী নেই। রাতে স্ত্রী ফোন করে সেলিমকে বলেন, ফারহাদ তাঁকে জোর করে বর্ধমানে তুলে নিয়ে গিয়েছেন। পরের দিন লোকলস্কর নিয়ে গিয়ে বর্ধমান থেকে স্ত্রীকে উদ্ধার করে আনেন সেলিম। সে-দিনই মধ্যমগ্রাম ছেড়ে তিনি পরিবার নিয়ে নীলগঞ্জে ফিরে যান। সেলিমের অভিযোগ, তার পরেও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ফারহাদের। এ দিন সকালে কাজে বেরোনোর নাম করে বাড়ির কাছেই অপেক্ষা করছিলেন সেলিম। দেখেন, স্ত্রী বিকেলে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তিনি স্ত্রীকে অনুসরণ করেন। তাঁর স্ত্রী বিমানবন্দরের এক নম্বর গেটের কাছে বাস থেকে নামেন। নতুন টার্মিনালের জন্য ভিআইপি রোড থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার সেতু ঢুকছে। সেই সেতু যেখানে বিমানবন্দর এলাকায় ঢুকছে, সেখানেই একটি জায়গায় বসে ছিলেন ফারহাদ এবং সেলিমের স্ত্রী। তার পরেই খুন। |