মাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র-বিভ্রাটের পরে এ বার একই বিপত্তি দেখা দিল স্নাতক পর্যায়ের পরীক্ষাতেও। নির্দিষ্ট দিনের আগেই প্রশ্নপত্র বিলি হয়ে যাওয়ায় সংস্কৃত অনার্সের প্রথম পত্র কোর্স-২-এর পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ, শুক্রবার সংস্কৃত অনার্স (বিএ পার্ট ওয়ান) কোর্স-২-এর প্রথম পত্রের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবারেই তার কিছু প্রশ্নপত্র বেরিয়ে যাওয়ায় পরীক্ষাটি পিছিয়ে ১৮ জুলাই নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন নিয়ে এই বিভ্রাটের তদন্ত করতে এক সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবারেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ট ওয়ান পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ দিন ছিল সংস্কৃত অনার্স কোর্স-১-এর প্রথম পত্রের পরীক্ষা। ৫০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ২০০৮ জন পরীক্ষার্থী সংস্কৃত অনার্স পরীক্ষা দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, গুরুদাস কলেজে এ দিন কোর্স-১-এর সঙ্গে কোর্স-২-এরও কিছু প্রশ্নপত্র চলে যায় এবং সেগুলি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিলিও করা হয়। পরে অবশ্য সব পরীক্ষার্থীকেই কোর্স-১-এর প্রশ্নপত্র দেওয়া হয় এবং শেষ পর্যন্ত এ দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই সাঙ্গ হয়েছে বলে জানান পরীক্ষা নিয়ামক ওঙ্কারসাধন অধিকারী।
পরীক্ষা নিয়ামক বলেন, “গুরুদাস কলেজের তরফে গোলমালের কথা জানানো হয় আমাদের। খবর পেয়েই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়কে সেই বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
প্রশ্নপত্র-বিভ্রাট তো ছিলই। সেই সঙ্গে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক সময়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতির জেরে প্রথম দিনেই পার্ট ওয়ান পরীক্ষা নিতে সমস্যা হয়েছে বেশ কিছু কলেজে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, দু’-এক দিন কোনও ভাবে কাজ উতরে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আংশিক সময়ের শিক্ষকেরা দিনের পর দিন কাজ বন্ধ রাখলে পরীক্ষা নেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে বলে অনেক কলেজের তরফে জানানো হয়েছে।
আংশিক সময়ের শিক্ষকদের সংগঠন কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল বা ‘কুটাব’-এর সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অবশ্য জানান, পরীক্ষার কাজে ব্যাঘাত ঘটানো বা ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা তৈরি করার কোনও অভিপ্রায় তাঁদের নেই। তিনি বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমস্যার কথা শুনে তা সমাধানের আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হবে।” আংশিক সময়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানুয়ারি থেকে বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। অবিলম্বে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাসপয়লা বেতন এবং বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছে ‘কুটাব’। অনেক কলেজেই পঠনপাঠন, পরীক্ষা, মূল্যায়নের কাজকর্ম অনেকাংশেই আংশিক সময়ের শিক্ষকদের উপরে নির্ভর করে। আপাতত তাঁদের কর্মবিরতিতে পার্ট ওয়ান পরীক্ষার কাজকর্ম চালাতে অসুবিধা হতে পারে বলে অনেক কলেজের আশঙ্কা। |