উদ্বোধনের পরে দু’সপ্তাহও কাটেনি। ১১ দিনের মাথাতেই ভেঙে গেল পাতিপুকুর আন্ডারপাসের রাস্তা। আন্ডারপাস উদ্বোধনের দিন সেটি তৈরির কৃতিত্ব দাবি করেছিল তৃণমূল ও সিপিএম দু’পক্ষই। কিন্তু এখন রাস্তার এই হালের দায় কে নেবে, তা নিয়ে ওই দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপান-উতোর। তবে রাস্তা তৈরির সময়ে উপকরণের মান যাচাইয়ের ব্যাপারে যে কোনও সচেতনতাই তৈরি হয়নি, এই ঘটনা ফের তা প্রমাণ করল।
বুধবারের ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে পাতিপুকুর আন্ডারপাসের রাস্তার পিচের ম্যাসটিক অ্যাসফল্ট প্রায় পুরোটাই উঠে গিয়েছে। কিন্তু মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি আন্ডারপাসের এই হাল কেন হবে, সে প্রশ্ন তুলেছেন পাতিপুকুর বিধানপল্লি এলাকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, আন্ডারপাসের রাস্তা যেমন ভেঙেছে, তেমনই প্রায় এক কোমর জল জমেছে। রাস্তার খন্দে পড়ে বেশ কয়েকটি গাড়ি খারাপ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা দেবীপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, “আন্ডারপাস চালু হওয়ার পরে যানজট কমেছে। কিন্তু এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই রাস্তার এই হাল হলে টানা বৃষ্টিতে কী হবে?” |
যশোহর রোডের পাতিপুকুর এলাকাকে যানজট মুক্ত করতে ওই আন্ডারপাস তৈরির পরিকল্পনা হয়। এর শিলান্যাস হয়েছিল ২০০১ সালে। বামফ্রন্ট আমলে শুরু হওয়া সেই প্রকল্প শেষ হয় তৃণমূল কংগ্রেস সরকারে আসার পরে। কাজটি করে কেএমডিএ। আন্ডারপাস উদ্বোধন করতে এসে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, বামফ্রন্ট আমলে এই কাজ থমকে ছিল। ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে এই আন্ডারপাসের বাকি কাজ শেষ হয়ে গেল। কাজের বেশিরভাগ অংশটাই তাঁদের আমলে করা। যদিও তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য জানান, বাম আমলেই আন্ডারপাসের ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছিল।
পুরমন্ত্রী অবশ্য রাস্তার খারাপ মানের দায় পুরোপুরি বামফ্রন্ট আমলের উপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বামফ্রন্ট আমলের কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরাই এই রাস্তার কাজ করেছেন। কেএমডিএ-র পরিকাঠামোগত নানা ত্রুটি ছিল। এক বছরের মধ্যে তো পুরো খোলনলচে বদলানো যায় না। তবে এই ঘটনার জন্য কারা দায়ী তার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অন্য দিকে, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের আমলে রাস্তার ম্যাসটিক অ্যাসফল্টের কাজ হয়নি। এই সরকার আসার পরে হয়েছে। আমরা কেন এর দায়ভার নেব?” যদিও অশোকবাবু আগে দাবি করেছিলেন, রাস্তার ৮০ শতাংশ কাজ বাম আমলেই হয়ে গিয়েছে। তাই সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার প্রশ্নটা থেকেই গেল।
|