হোম সায়েন্স, জৈব রসায়নের পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স বিভাগ। ফের শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ।
মেরিন সায়েন্সের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর অভিযোগ, পড়া বোঝার জন্য তিনি প্রায়ই তাঁদের বিভাগের শিক্ষক অভিজিৎ মিত্রের বাড়িতে যেতেন। সেখানেই ওই শিক্ষক বারবার তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। অভিজিৎবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁকে ফাঁসানোর জন্য চক্রান্ত করে ছাত্রীটি এমন অভিযোগ তুলেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষক।
এর আগে হোম সায়েন্স বিভাগের বাংলার শিক্ষক ইন্দুভূষণ মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিভাগের এক গবেষণাগারের ভিতরে তাঁর শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানান এক ছাত্রী। ইন্দুভূষণবাবুর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গড়া হয়। দু’বছর সাসপেন্ড থাকার পরে সম্প্রতি তাঁকে কাজে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ওই বিভাগে না-রেখে অন্য কোথাও নিয়োগ করা হবে। জৈব রসায়ন বিভাগের শিক্ষক শৈবাল মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছিল। তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্তই করা হয়। তার পরে ফের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কিছুটা অস্বস্তিতে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি অভিজিৎবাবুর বিরুদ্ধে আচার্য-রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা পড়ে। রাজভবন থেকে সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছয়। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বৃহস্পতিবার বলেন, “একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই এ বিষয়ে যা করার করা হবে।” অন্য এক আধিকারিক বলেন, “ঘটনা সত্য কি না, সেটা তদন্তসাপেক্ষ। কিন্তু বারবার এই ধরনের অভিযোগ ওঠায় প্রাচীনতম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।”
যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে অভিজিৎবাবু এ দিন বলেন, “দিন চারেক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনাটা জানতে পারি। যদিও আমি এই নিয়ে লিখিত কিছু হাতে পাইনি। তবে এটুকু বলতে পারি যে, এটা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়!” যদিও ছাত্রীটি কেন তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে যাবেন, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ওই শিক্ষক।
তবে অভিজিৎবাবুর দাবি, অভিযোগকারিণী ছাত্রীটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর একটি সেমিনারে যোগ দেওয়ার জন্য কয়েক মাস আগে তাঁর সঙ্গে পুরুলিয়ায় গিয়েছিলেন। এর আগেও অনেক বার ওই ছাত্রী তাঁর সঙ্গে ‘ফিল্ড ওয়ার্ক’-এ গিয়েছেন বলে দাবি ওই শিক্ষকের। তিনি বলেন, “অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে ওই ছাত্রীও গিয়েছে ফিল্ড ওয়ার্কে। পড়া বোঝার জন্য, দরকারি বইপত্র নেওয়ার জন্য আমার বাড়িতেও গিয়েছে সে। অনেক ছাত্রছাত্রীই এই কারণে আমার বাড়িতে যায়, এখনও নিয়মিত আসে।” অভিজিৎবাবু এবং ছাত্রছাত্রীদের একাংশের প্রশ্ন, বারবার শ্লীলতাহানি করা হলে ছাত্রীটি আগেই অভিযোগ জানাতে পারতেন।
এত দিন পরে তা জানানোর কারণ কী? অভিযোগের ব্যাপারে চিঠি পাওয়ার পরে তিনি এই ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নেবেন বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষক। |