|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
বাঙালির ভ্রমণেচ্ছা মূলত তিন শ্রেণীর |
|
মল্লিকা সেনগুপ্তের উদ্দেশে মল্লার-এর (সম্পা: শুভময় সরকার) ক্রোড়পত্রে ‘মানবী ভাবনা’টি উৎসর্গিত । এটির সম্পাদক সুতপা সাহা জানিয়েছেন ‘নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা তো শুধু প্রান্তিকতা থেকে মূল ধারায় নারীর অধিকার স্থাপন নয়, মূল ধারাটাই যাতে সমস্ত প্রান্তিকের অধিকারকে গ্রহণ করে গড়ে ওঠে, তার প্রচেষ্টা।’ ক্রোড়পত্রের শুরুতেই দু’টি জবরদস্ত প্রবন্ধ রুশতী সেনের ‘বাংলায় নারীশিক্ষা: আরম্ভ এবং তারপর’, আর যশোধরা রায়চৌধুরীর ‘ফ্যাশন-পোশাক-আশাক: বাঙালিনীর বদলতি তসবির’। সঙ্গে ‘মেয়েদের আত্মকথায় দেশভাগ’ নিয়ে সুমনা দাস সুরের জরুরি প্রবন্ধ। এ ছাড়াও ক্রোড়পত্রটিতে লিখেছেন অমর মিত্র স্বপ্নময় চক্রবর্তী প্রমুখ। ‘হাংরি-জেনারেশন’ সাহিত্যের শৈলেশ্বর ঘোষ ও চলচ্চিত্রকার বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের সাক্ষাৎকার।
সাগ্নিক-এ (সম্পা: তপস্যা ঘোষ) বাংলা-সংক্রান্ত যে সব রচনা সংকলিত হয়েছে সে সবের বৈচিত্র বিস্তর। বাংলার প্রায় অনালোচিত দলিত, আবার অতি আলোচিত পিছিয়ে-থাকা মুসলমান সমাজ নিয়ে যেমন আলোচনা, তেমনই প্রান্তিক আদিবাসী সমাজ, উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজ, এমনকী প্রবাসী বাঙালিদের নিয়েও আলোচনা। সম্পাদকের কথা-য় জানানো হয়েছে: সামগ্রিক ভাবে ‘বাংলা’ আমাদের কাছে কী ভাবে প্রতিভাত হয়, হয়তো আমরা সেটাই বুঝতে চেয়েছিলাম। সম্পাদকের এ-মন্তব্যের সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হবে বাংলার ভ্রমণ সাহিত্যের ধারা নিয়ে প্রয়াত শ্রীহর্ষ মল্লিকের লেখাটি— ‘বাঙালির বা ভ্রামণিক-বাঙালির ভ্রমণেচ্ছা হল মূলত তিন শ্রেণির: বিশুদ্ধ তীর্থভ্রমণ, শিক্ষিত সমাজের বিশুদ্ধ দেশভ্রমণ এবং মধ্যবিত্তের দেশদর্শন।’
‘মল্লিকা সেনগুপ্ত: ব্যক্তি জীবনে সৃষ্টির ভুবনে’ এই নিয়ে তবু একলব্য (সম্পা: দীপঙ্কর মল্লিক)। আমন্ত্রিত সম্পাদক কৃষ্ণা বসু তাঁর প্রাক্-কথনে জানাচ্ছেন, ‘মল্লিকার ইতিহাস-চেতনাও আমাকে তার রচনার দিকে আকৃষ্ট করেছিল... ।’ সংখ্যাটি জুড়ে মল্লিকার একগুচ্ছ কবিতা, তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন কবি ও প্রিয়জনের স্মরণ, তাঁর কবিতা ও কাজের মূল্যায়ন, গ্রন্থপঞ্জি, জীবনপঞ্জি, নানা মুহূর্তের দুর্লভ ছবি, এবং সুবোধ সরকারের রচনা। ‘আমার দেশের নাম বলো
আমার কোনো আদেশ নেওয়ার প্রয়োজন নেই’
—হীরেন ভট্টাচার্যের কবিতার লাইন। অসমের নানান পথে তিনি পায়ে হেঁটেই ঘুরে বেড়ান নদী, মানুষ, গাছগাছালি দেখতে। অসমিয়া সাহিত্যের অন্যতম প্রধান এই কবি পঞ্চাশের দশকে যুক্ত ছিলেন ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের সঙ্গে। ষাটের দশকের শেষ বা সত্তর দশক জুড়ে অসমিয়া কবিতার আশ্চর্য জাদুতে মাতিয়ে রাখতে শুরু করেন হীরেন ভট্টাচার্য। গোটা সাতেক কবিতার বই, সম্মান-স্বীকৃতি-পুরস্কারও প্রচুর, বাংলায় অনূদিত হয়েছে তাঁর বই। তাঁকে নিয়ে সম্মাননা সংখ্যা করেছে কারুকথা (সম্পা: সুদর্শন সেনশর্মা)। কবির লেখা কয়েকটি বাংলা গানও প্রকাশ পেয়েছে এতে।
‘মানব জীবনের প্রতিটি সামাজিক সংস্কৃতির পটভূমি নির্মাণের ক্ষেত্রে মৌলিক উপাদান স্বরূপ লোকায়ত সংস্কৃতির সন্ধান মেলে।’— জানিয়েছেন লোকসংস্কৃতি সংবাদ-এর সম্পাদক শুভঙ্কর দাস। লোকসংস্কৃতি-সম্পৃক্ত বিবিধ বিষয়— উত্তরবঙ্গের মুখোশ নৃত্য, ব্যাঘ্রবাহন দেবদেবী, জয়দেবের কেঁদুলি, গারো লোকসাহিত্য, চণ্ডীমঙ্গলের লোকায়ত প্রসঙ্গ, ধাঁধায় লোকগণিত, পাল্কির গান, মা ও শিশুর ছড়ায় সমাজচেতনা, প্রবাদ, সুন্দরবনের লুপ্তপ্রায় লোকসঙ্গীত ইত্যাদি নিয়ে রীতিমত জমকালো সংখ্যা। বাঁশরী মুখোপাধ্যায় তাঁর ‘ক্রমবিবর্তনে দেবী চণ্ডী’ নিবন্ধে লিখছেন: ‘উচ্চস্তরের আম-জনতা পিতৃতান্ত্রিক ও পুরুষপ্রধান সমাজে অবস্থান করলেও এই নারীদেবতার প্রাধান্য মেনে নেন। তাই বৈশ্য সম্প্রদায়ভুক্ত শিবের উপাসক ধনপতিকে কমলে কামিনী মূর্তি দেখানো হয়।’
বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, ভাষা, শিক্ষা, বিজ্ঞান, নারীবিশ্ব, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সমাজ, সংগীত, সাহিত্য, শিল্পকলা-ভাস্কর্য, নাটক-চলচ্চিত্র ইত্যাদি নানা বিষয়ে নীললোহিত-এর (সম্পা: বাসব দাশগুপ্ত) আলোকপাত। উপলক্ষ: বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির চল্লিশ বছর। নির্মলেন্দু গুণের কবিতা অবলম্বনে তানভীর মোকাম্মেলের প্রথম ছবি ‘হুলিয়া’র চিত্রনাট্য ছাপা হয়েছে, সঙ্গে তানভীর তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন: ‘রাজনৈতিক ঝুঁকিটা ছিল। কারণ তখন দেশে বেশ কড়া সামরিক শাসন চলছিল।’ হাসান আজিজুল হক এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ‘সম্পূর্ণভাবে বাংলার ব্যবহার চলছে।... নতুন পরিভাষাও অনেক বেরিয়েছে।... অবশ্য পাশাপাশি দুঃখজনক হচ্ছে, মধ্যবিত্ত পরিবারের ভেতরে ইংরেজি শিক্ষার প্রতি মোহ তৈরি হচ্ছে।’
বাল্মীকি-তে (সম্পা: শ্যামলবরণ সাহা) কে জি সুব্রহ্মণ্যনের প্রচ্ছদের সঙ্গে প্রকাশ কর্মকার বিজন চৌধুরী রবীন মণ্ডলের রেখাচিত্র, দিনকর কৌশিকের ছবি, শর্বরী রায়চৌধুরীর ভাস্কর্যের ছবি। ক্রোড়পত্রে কবি প্রশান্ত দাসকে নিয়ে আলোচনা। যদিও পুনর্মুদ্রণ তবু শর্বরী রায়চৌধুরীর গুরুত্বপূর্ণ গদ্য ‘আমি ও আমার সময়’। |
|
|
|
|
|