|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
সুরধ্বনি নহে, সুরধুনী |
বইপোকা |
অপরের ভুল ধরা ভাল। তাহাতে সাহিত্যের উন্নতি ঘটে। কিন্তু ভুল যদি ভুলেরই ভিত্তিতে ধরিতে যাওয়া হয়? বিষয়টি হাস্যকর হয়, লজ্জাজনকও। অদ্য তেমনই একটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করিব। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, উন্নয়ন চর্চা সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত সুধীর চক্রবর্তী সম্পাদিত রবীন্দ্রনাথ: বাক্পতি বিশ্বমনা গ্রন্থে বুড়োশিব দাশগুপ্ত লিখিত প্রবন্ধ ‘রবীন্দ্র সংগীতের ভাষান্তর’। বিষয়টি প্রসঙ্গে লেখক এই প্রবন্ধে বিস্তর সমালোচনা করিয়াছেন। প্রবন্ধের একাংশ উদ্ধৃত করি: ‘তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী’ গানের প্রথম স্তবকের শেষে আছে ‘পাষাণ টুটে ব্যাকুল বেগে ধেয়ে বহিয়া যায় সুরের সুরধ্বনি’... কল্পনা বর্ধন অনুবাদ করেছেন:
Breaking up rocks, in eagerly rushing pace,
Music flows out like the Ganga from heaven
ছন্দ রাখার জন্য উনি কোথা থেকে ‘গঙ্গা’কে নিয়ে এসেছেন? রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় এরকম অনুপ্রবেশ কি গ্রহণযোগ্য?’ কিন্তু ‘বাক্পতি’ রবীন্দ্রনাথের পক্ষে কি ‘সুরের সুরধ্বনি’র ন্যায় ‘আপ টু শ্যামবাজার পর্যন্ত’ লেখা সম্ভব? সমালোচকের মনে এমত সংশয়টি জন্মিলে গীতবিতানটি খোলার অবকাশ ঘটিত। ঘটিলে দেখা যাইত, ওই গ্রন্থধৃত গানটিতে আলোচ্য পংক্তিটি এই রূপে মুদ্রিত হইয়াছে, ‘পাষাণ টুটে ব্যাকুল বেগে ধেয়ে বহিয়া যায় সুরের সুরধুনী’। ‘সুরধ্বনি’ নহে, ‘সুরধুনী’। ‘সুরধুনী’ গঙ্গারই অপর নাম। স্মরণ করুন, দীনবন্ধু মিত্রের সুরধুনী কাব্য। পাষাণ টুটে ব্যাকুল বেগে ধেয়ে সুরের সুরধুনী বহিয়া যাইবার মধ্যে একটি নদীরই যে চিত্রকল্প ফুটিতেছে তাহা সহজেই বুঝা যায়। |
|
|
|
|
|