দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
বাস অমিল
দুর্ভোগের যাতায়াত
ড় হলে চার জন। সঙ্গে ছোটরা থাকলে ছ’সাত জন। সামনে চালক-সহ আরও চার জন। এ ভাবেই অটোতে মুচিশা, নোদাখালি, ডোঙারিয়া এবং রায়পুর অঞ্চলের যাত্রীরা যাতায়াত করেন। তা ছাড়া আছে টাটা ম্যাজিক। সেখানে পাদানি, এমনকী, ছাদেও যাত্রী বসেন। কারণ, এ রুটে বাসের সংখ্যা অত্যন্ত কম। যে ক’টি আছে তাদেরও দেখা পাওয়া ভার বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরা জানান, দক্ষিণ শহরতলিতে দ্রুত নগরায়ণের ফলে জনসংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে সে তুলনায় বাসের রুট এবং সংখ্যা বাড়েনি। এ পথে ৭৫, এসবি ২৬, এসবি ২২ এবং এল ৭৫ চলে। এর মধ্যে ৭৫ নম্বর ধর্মতলা থেকে ঠাকুরপুকুর, মুচিশা, নোদাখালি, ডোঙারিয়া হয়ে রায়পুর পর্যন্ত যায়। এসবি ২৬ ধর্মতলা থেকে ঠাকুরপুকুর, বাখরাহাট, ডোঙারিয়া, বিশালাক্ষীতলা হয়ে বুড়ুল যায়। এসবি ২২ ধর্মতলা থেকে মুচিশা হয়ে দিঘির পাড় পর্যন্ত যায়। এল ৭৫ সরকারি বাস। এটি বেহালা চৌরাস্তা থেকে ডোঙারিয়া হয়ে রায়পুর পর্যন্ত যায়।
নিত্যযাত্রীরা জানান, ৭৫ ছাড়া বাকি রুটের বাসগুলির কার্যত দেখা মেলে না। ফলে ৭৫-এ প্রচণ্ড ভিড় হয়। অনেক যাত্রীই তাই যে কোনও ভাবে ঠাকুরপুকুর পৌঁছন। সেখান থেকে অটো করে বাখরাহাট। সেখান থেকে অটো নিয়ে গন্তব্যে। এ ভাবে যাতায়াতে খরচও বেশি হয়।
অভিযোগ, ভিড়ের চাপে অধিকাংশ অটোচালক নিয়ম মেনে যাত্রী তোলেন না। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। মুচিশার পর থেকে টাটা ম্যাজিক পাওয়া যায়। সেখানেও গাড়ির মাথায়, পাদানিতে যাত্রী ওঠেন। অনেক সময় মহিলা-শিশুদেরও টাটা ম্যাজিকের ছাদে চড়ে যাতায়াত করতে হয়। নিত্যযাত্রী নির্মল নস্কর বলেন, “বাস প্রায় নেই। এখানে অটো বা টাটা ম্যাজিকে প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হয়। কেউ নিয়ম মানেন না। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
এই এলাকার বেশির ভাগ অটো সিটু নিয়ন্ত্রিত। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সিটু নিয়ন্ত্রিত অটো ইউনিয়নের সভাপতি তথা বাখরাহাট অটো ইউনিয়নের সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সামন্ত বলেন, “আমাদের রুটে অটোর ভাড়া অনেক কম। তাই কিছু অটোচালক বেশি যাত্রী তোলেন। আগে একটি ইউনিয়ন থাকলেও এখন দু’টি ইউনিয়ন। যদিও আমাদের অটোই বেশি। ভাড়া বাড়িয়ে কম সংখ্যক যাত্রী তোলার বিষয়ে অন্য ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলব।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এসবি ২৬ এবং এসবি ২২ রুট দু’টি দক্ষিণ ২৪ পরগনা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের অধীন। কিন্তু বেশির ভাগ বাসই ১৫ বছরের পুরনো। তাই বন্ধ রয়েছে। মালিকরাও নতুন বাস নামাচ্ছেন না। নতুন রুট নিয়ে আলোচনা চলছে। এ রুটের অনেকটাই কলকাতার উপর দিয়ে যায়। তাই রাজ্য পরিবহণ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা প্রায়ই অভিযান চালাই। পুলিশও নজরদারি চালায়। তবে সব সময়ে নজরদারি চালানো যায় না।”
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “আগে রাস্তা খারাপ এবং রাতে ছিনতাইয়ের সমস্যা থাকায় সন্ধ্যার পরে বাস কম চলত।
১৫ বছরের বেশি পুরনো বাস তুলে নেওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। আমি এলাকার বিধায়কের সঙ্গে পুরনো এবং নতুন বাসরুট বিষয়ে কথা বলব।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.