দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
বেহাল পথ
কে নেবে দায়
কোথাও বিডিও অফিসের প্রবেশপথ পড়েছে পুরসভার আওতায়। তাই তার সংস্কারের দায় পুরসভার। আবার কোথাও এই পথ পঞ্চায়েত সমিতির আওতায়। সংস্কার নিয়ে এই চাপানউতোরে সোনারপুর-বোসপুকুর ও বারুইপুর বিডিও অফিসের সামনের রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল।
সোনারপুর-বোসপুকুরের বিডিও অফিসের সামনের রাস্তা পুর-এলাকার আওতায় পড়ছে। তাই তা সারানোর দায় পুরসভারই। কিন্তু অভিযোগ, উদ্যোগী হয়নি পুরসভা। তাই ওই রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে বলে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। তেমনই বারুইপুর বিডিও অফিস চত্বরের রাস্তাও দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। ওই রাস্তাটি সংস্কারের পরিকল্পনা বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতির আছে বলে জানা গেলেও সেই পরিকল্পনা কবে বাস্তবায়িত হবে, তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
অথচ, এই দুই বিডিও অফিস এবং পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে সপ্তাহের ব্যস্ত দিনে দুই এলাকার অনেক বাসিন্দা বিভিন্ন কাজে আসেন। এবং শুধু যে সোনারপুর এবং বারুইপুর গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দারাই এই দুই অফিস চত্বরে নিয়মিত যাতায়াত করেন তাই নয়, পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রচুর মানুষও এই দুই রাস্তার ধারে বসবাস করেন। সকলেরই অভিযোগ, বেহাল রাস্তা সংস্কার দূরের কথা, ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণও করা হয় না। বর্ষার সময়ে এই সব রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে খুব অসুবিধা হয় বলে জানান ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
সোনারপুরের বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির অফিস বোসপুকুর এলাকায়। সোনারপুর থেকে রাজপুর যাওয়ার পথে বোসপুকুর স্টপে নেমে বোসপুকুর রোড ধরে বেশ খানিকটা এগোলেই অফিস। প্রবেশপথটি দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তাটি জায়গায় জায়গায় এবড়োখেবড়ো। বর্ষায় তা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। এলাকার বাসিন্দা সমর রায়ের কথায়: “বিডিও অফিসের প্রবেশপথ সারাইয়ের কাজ কবে হয়েছে, তা মনে করা কঠিন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনারপুরের বিডিও অফিস চত্বরে আলোরও অভাব রয়েছে। সোনারপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, “এলাকাটি পুরসভার আওতায় পড়ছে। তাই সমস্যার সমাধান চেয়ে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছি।” সোনারপুরের বিডিও পারমিতা বসুসাহা বলেন, “এই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব পুরসভার।” রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ইন্দুভূষণ ভট্টাচার্য বলেন, “রাজপুর, সোনারপুরের সব রাস্তা সারানো হচ্ছে। ওই রাস্তাও সারানো হবে।” অথচ স্থানীয় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, তৃণমূলের কাঞ্চন চক্রবর্তী বলেন, “বিডিও অফিসের রাস্তাটি কুড়ি বছর ধরে খারাপ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কিন্তু এই সমস্যা নিয়ে আমার সঙ্গে কেউ আলোচনা করেনি। রাস্তাটি সম্ভবত পুর-এলাকার আওতায় নয়। এটি বিডিও অফিসের আওতায়। তাই সংশ্লিষ্ট বিডিও আমার সঙ্গে এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করলে অবশ্যই রাস্তা সারানোর ব্যবস্থা করা হবে।”
ক্যানিং রোডের পাশে পিয়ালি টাউন ফুলতলায় বারুইপুরের বিডিও অফিস এবং পঞ্চায়েত সমিতির পাশে কার্যালয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পনেরো বছর আগে শেষ বার বিডিও অফিস চত্বরের রাস্তা সংস্কারের কাজ হয়েছিল। এখন অধিকাংশ জায়গায় রাস্তার পিচ উঠে গিয়েছে, বড় বড় গর্ত হয়েছে। বিভিন্ন মহলে বারবার রাস্তা সারাইয়ের আবেদন জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি বলে বাসিন্দারা জানান।
বারুইপুরের বিডিও মহম্মদ আসাফ ইকবাল বলেন, “কাজটা করবে পঞ্চায়েত সমিতি। তবে প্রশাসনিক স্তরে রাস্তা সারাইয়ের একটা পরিকল্পনা করা হয়েছে।” বারুইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের প্রকাশ মণ্ডল জানিয়েছেন, বিডিও অফিস চত্বরের রাস্তার সমস্যা পঞ্চায়েত সমিতির নজরে এসেছে। রাস্তা সারাইয়ের জন্য একটা পরিকল্পনাও করা হয়েছে। কিন্তু কবে এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
বারুইপুরের এসডিও হাসান আর্শাদ ওয়ার্সি বলেন,“এই সমস্যা সর্ম্পকে সবিস্তার খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.