|
|
|
|
|
|
উত্তর কলকাতা |
লক্ষ্য জাতীয় স্তর |
সাঁতরে রাজ্য জয় |
আর্যভট্ট খান |
পড়াশোনার ফাঁকে বরাদ্দ মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা। ওইটুকু সময়েই মনোযোগ দিয়ে সাঁতারের অনুশীলন করত লেকটাউন-নাগেরবাজার এলাকার দুই কিশোরী দেবারতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও অম্বালিকা বসাক। ফলও মিলল হাতে হাতে। বয়সভিত্তিক রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপের দু’টি বিভাগে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম হয়ে জাতীয় বয়সভিত্তিক চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে দু’জনেই। লেকটাউন সুইমিং পুলে প্রশিক্ষণ নেওয়া দুই কিশোরীই এখন জাতীয় স্তরে ভাল ফল করতে বদ্ধপরিকর।
প্রতিযোগিতায় ভাল ফল করেছে দেবারতি, অম্বালিকাদের সঙ্গে একই পুলে সাঁতার কাটা আর এক কিশোরী ঋতজা মুখোপাধ্যায়ও। একই প্রতিযোগিতায় একটি বিভাগে তৃতীয় হয়েছে সে।
|
|
ফ্রি স্টাইল সাঁতারের ৫০ ও ১০০ মিটারে (গ্রুপ টু) প্রথম দেবারতি ৪০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে দ্বিতীয় ও ২০০ মিটার ফ্রি স্টাইলেও তৃতীয়। জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকরতে জুলাই মাসের ৯ তারিখ চেন্নাই যাচ্ছে সে। অম্বালিকা প্রথম হয়েছে ৫০ ও ১০০ মিটার বাটারফ্লাই (গ্রুপ থ্রি) সাঁতারে। জাতীয় স্তরে অংশ নিতে সে যাচ্ছে রাজকোট। একটুর জন্য জাতীয় প্রতিযোগিতায় যাওয়া ফস্কে গেলেও ঋতজা রাজ্যস্তরের দু’শো মিটার ফ্রি স্টাইলে তৃতীয়। একটুও না দমে জানিয়ে দিয়েছে, পরের বার জাতীয় প্রতিযোগিতায় সে যাবেই।
ক্লাস টেনের দেবারতি সাঁতার কাটছে সাত বছর ধরে। ক্লাস সিক্সের অম্বালিকা গত চার বছরেরও বেশি। দু’জনেই জানাল, খুব ছোটবেলায় লেকটাউন সুইমিং পুলে সাঁতার শেখা শুরু। ধীরে ধীরে সাঁতারটাকে ভালবেসে ফেলেছিল দু’জনেই। তার পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পুলেই কেটেছে। প্রতিযোগিতার আগে পড়াশোনার ফাঁকেই ঘণ্টা দুই অনুশীলন। ছুটির দিনে অবশ্য কোনও বাঁধাধরা সময় ছিল না। তবে এই ভাল ফল করার পিছনে তাঁদের মা,বাবা ও কোচের ভূমিকা যে খুব বেশি, জানাতে ভুলল না দু’জনেই।
জহুরির চোখ অম্বালিকা ও দেবারতিকে চিনতে ভুল করেনি। দুই কোচ অভিজিত ঘোষ ও প্রবীর রায় বলেন, “দীর্ঘক্ষণ ধরে অনুশীলন করার ফল পেয়েছে ওরা। আর ঋতজা এ বার না পারলেও আশা করা যায় আগামী বছরে ও আরও উন্নতি করে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় যেতে পারবে।”
লেকটাউনের এই তিন কন্যার পাশাপাশি আর এক জনকেও ভুললে চলবে না। ঋতজার বোন ঋদ্ধি মুখোপাধ্যায়। সতেরো বছরের ঋদ্ধি বধির। |
|
ঋদ্ধি মুখোপাধ্যায় |
গত বছর ফ্রি স্টাইল ও ব্যাক স্ট্রোকে রাজ্য চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় প্রতিযোগিতায় গিয়েছিল। দু’টি রুপো ও দু’টি ব্রোঞ্জও পেয়েছে। জাতীয় প্রতিযোগিতায় ভাল ফল করে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কুড়ি হাজার টাকা পুরস্কারও পেয়েছে ঋদ্ধি।
তবে জাতীয় স্তরই পাখির চোখ নয়। লেকটাউনের এই কিশোরীরা পৌঁছতে চায় আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রতিযোগিতায়। তাদের কোচ অভিজিৎ ও প্রবীর বলেন, “স্বপ্ন সার্থক করতে এদের শুধু ভাল সাঁতার কাটলেই চলবে না, সঙ্গে দরকার ভাল পরিকাঠামোও। আমাদের দেশে তার অভাব রয়েছে। ভাল সাঁতারু তৈরি করতে বিদেশে রীতিমতো গবেষণা হয়, কী ভাবে সাঁতার কাটলে শারীরিক সক্ষমতা বাড়বে। আমাদের এখানে সে সবের বালাই নেই। বিদেশে নতুন নতুন স্পোর্টস মেডিসিন তৈরি হচ্ছে। এগুলোর কথাই জানাই নেই। এ সব ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।” |
|
|
|
|
|