নদী-পাড়ের মাটি কাটায় বাঁধ ভাঙছে বাঁশলৈ
কৃষি জমির তোয়াক্কা না করেই চলছিল যথেচ্ছ মাটি কাটা। নিষেধ করলে গ্রামবাসীদের পাল্টা ‘হুঁশিয়ার’ করে দিয়েছিল ‘মাটি-মাফিয়ারা’। তারই প্রতিবাদে সুতির হাড়োয়া গ্রামের কয়েকশো বাসিন্দা বৃহস্পতিবার অবরোধ করলেন কানুপুর-বহুতালি রাজ্য সড়ক।
গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বামফ্রন্ট। আর তাতেই কিছুটা রাজনৈতিক চেহারা পেয়ে গিয়েছে ওই প্রতিবাদ। তবে এ দিনের প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের অবরোধে থমকে পড়েছে ওই রাস্তা দিয়ে অনর্গল যাতায়াত করা ঝাড়খণ্ড থেকে আসা বালি ও পাথর বোঝাই লরি। বন্ধ হয়ে যায় বাস চলাচলও। ফলে দুপুরে অবরোধ উঠলেও ওই পথে যানজট কাটতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
ঝাড়খণ্ড থেকে নেমে আসা বাঁশলৈ নদী প্রায় বর্ষায় বেশ স্ফীত। সুতি-১ নম্বর ব্লকের অন্তত পনেরোটি গ্রামে এই সময়ে বাঁশলৈয়ের জলে প্রতি বছর ভাসে। অভিযোগ, কান্দোয়া গ্রামের আশপাশের বিস্তীর্ণ ধান জমি থেকে গত চার মাস ধরে নিয়মিত মাটি কাটার ফলে নদী বাঁধের ভাঙন প্রায় অবসম্ভাবি হয়ে পড়েছে। তাঁদের আশঙ্কা নদী উপচে জল এ বার ওই গ্রামে ঢুকলে বন্যা ভয়াবহ চেহারা নেবে। জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসক এনাউর রহমান বলেন, “ইতিমধ্যেই সুতির প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
আতঙ্কিত গ্রামগুলির একটি সিধোরি। গ্রামের অধিকাংশই কৃষিজীবী। ওই গ্রামের বাসিন্দা ইয়াকুব হোসেন বলেন, “বীরভুমের বেশ কয়েক জায়গায় ইতিমধ্যেই বাঁধ ভেঙে গিয়েছে বাঁশলৈয়ের। এখানেও কান্দোয়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ওই নদীর বাঁধের পাশ থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। আমরা রাত জেগে আছি, এই বুঝি নদী-বাঁধ ভাঙল।” গ্রামবাসীদের অনেকেই জানিয়েছেন, স্থানীয় মাটি-দালাদের বালি তোলার জন্য মাস কয়েক আগে ছাড়পত্র দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু চার মাস হয়ে গেলেও সেই এক ফুট বালি তোলা এখন মাটি কাটায় রূপান্তরিত হয়েছে। তারা প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট গভীর মাটি কাটছে বাঁধের পাশ থেকেও। ফলে যে কোনো সময়ে বাঁধ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা সদানন্দ মণ্ডল বলেন, “নদী আর ক’দিনের মধ্যেই ওই বাঁধে ধাক্কা দেবে। আর তখন ভেসে যাবে সিধোরী। বাঁধের পাশের মাটি কেটে নেওয়ায় প্রতিরোধ করার কোনও উপায়ই থাকবে না।” এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি বলে গ্রামবাসীদের দাবি। সিপিএমের কৃষক সভার ব্লক সম্পাদক অরুণ ঘোষ বলেন, “চূড়ান্ত প্রশাসনিক গাফিলতি চলছে। কেউ কোনও সাড়াই দিচ্ছেন না।” সুতির বিধায়ক কংগ্রেসের ইমানি বিশ্বাস বলেন, “সুতির চাষিরা ঘোর বিপদে। স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীদেরও চাষিদের পাশে থাকতে বলা হয়েছে।”
সে আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন কি সিধোরীর মানুষ?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.