খুচরো ব্যবসা নিয়ে আসরে কংগ্রেসও |
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে সনিয়া গাঁধী সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমি তৈরির কাজ শুরু করে দিল কংগ্রেস। কেন্দ্র যাতে এ ব্যাপারে অবিলম্বে ছাড়পত্র দেয়, সে জন্য দাবি জানাতে শুরু করেছেন অসম, মহারাষ্ট্র, উত্তরাখণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা পর্যন্ত করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তাঁর বক্তব্য, যে সব রাজ্যের আপত্তি রয়েছে, তারা বিদেশি লগ্নিকে ছাড়পত্র দেবে না। কিন্তু তাদের জন্য বাকি রাজ্য বঞ্চিত হবে কেন? প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, সরকারও এই নীতি নিয়েই চলতে চাইছে। চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার সময় এটাই বলা হবে যে, এই নীতি কোনও রাজ্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এই নীতি রূপায়িত হলে কৃষক এবং উপভোক্তা দু’পক্ষই উপকৃত হবে বলে সরকারের দাবি। কৃষকরা যেমন কৃষিপণ্যের উপযুক্ত দাম পাবেন, তেমনই উপভোক্তারা কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারবেন। এ দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে অন্তত ৩০% সামগ্রী তাদের কাছ থেকে কেনার শর্ত কেন্দ্রর নীতিতে থাকছে। খসড়া ক্যাবিনেট নোটে বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করা হবে। সরকারের আশা, এতে রাজনৈতিক দলগুলির আশঙ্কার অবসান হবে। ৭-৮টি রাজ্য খুচরো পণ্যে বিদেশি লগ্নির অনুমতি দিলে প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতেও চাপ বাড়বে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের এক কর্তা বলেন, “কৃষিপণ্যের অহেতুক মূল্যবৃদ্ধি থেকে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দিতে চাইছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যদি প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির অনুমতি দেন, তা হলে অনায়াসেই রাজ্যবাসী সুরাহা পেতে পারে।” প্রশ্ন হল, মমতা কি এই যুক্তি মানবেন? যদি তিনি অবস্থান না পাল্টান, তবে কেন্দ্র কী করবে? সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, মমতার সঙ্গে ফের কথা বলবেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা। কথা বলবেন বিহার ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও। কেন্দ্রকে স্বস্তি দিয়ে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব।
|
খুচরোয় বিদেশি লগ্নি নিয়ে ফের সরব চিদম্বরম |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুচরো শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ চান না। সেই মমতার শহরে বসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদম্বরম বৃহস্পতিবার জানান, অধিকাংশ রাজ্যই খুচরো শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। কলকাতায় এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, কয়েকটি রাজ্য খুচরো শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আপত্তি করছে। তবে যে-সব রাজ্যের আপত্তি নেই, তারা খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগতই জানাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে ছিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী কপিল সিব্বল। দুই মন্ত্রীই খুচরো শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগের পক্ষে সওয়াল করেন। চিদম্বরমের বক্তব্য, বহু ভারতীয় লগ্নিকারী বিপুল পুঁজি নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু বিনিয়োগের জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন না। বিভিন্ন সংস্থা এখন পরিস্থিতি যাচাই করছে। সুযোগ পেলে ওই ভারতীয় লগ্নিকারীরা বিদেশি সংস্থার হাত ধরে খুচরো শিল্পে লগ্নি করতে পারেন বলে ইঙ্গিত দেন চিদম্বরম। খুচরো শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগে আপত্তি আছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ কিছু রাজ্যের। তাদের যুক্তি, খুচরো ব্যবসায় বহুজাতিক সংস্থা এলে ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়বেন। বাম-সরকারও এ নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল। আপত্তির কথা সরাসরি জানিয়েছেন মমতাও।
|
অর্থনীতির হাল ফেরাতে ব্যবস্থা ইউরোপ, চিনের |
অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বৃহস্পতিবার ফের সুদ কমানোর পথে হাঁটল ইউরোপ ও চিন। পাশাপাশি, মন্দার কবল থেকে ব্রিটেনকে টেনে তুলতে ৫ হাজার কোটি পাউন্ডের (৪ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা) নতুন আর্থিক ত্রাণ প্যাকেজ আনল ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড। এই নিয়ে এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় সুদ কমাল চিনা শীর্ষ ব্যাঙ্ক পিপ্লস ব্যাঙ্ক অফ চায়না। ঋণে মূল সুদের হার ৬.৩১% থেকে কমিয়ে করা হল ৬%। জমার ক্ষেত্রে তা ৩.২৫% থেকে কমে হল ৩%। মন্দায় তলিয়ে যাওয়া থেকে অর্থনীতিকে টেনে তুলতেই এই সিদ্ধান্ত বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকেও চিনের আর্থিক বৃদ্ধির হার কমবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। সে ক্ষেত্রে এই নিয়ে পরপর ছ’বার কমবে বৃদ্ধির হার, যা চরম মন্দার লক্ষণ বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। অন্য দিকে, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ঋণে তাদের সুদের হার ১% থেকে কমিয়ে করেছে ০.৭৫%। জমার উপর তা ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে নামিয়ে আনা হয়েছে শূন্য শতাংশে। এ দিকে, ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড ৫ হাজার কোটি পাউন্ডের সমপরিমাণ সরকারি ঋণপত্র কিনবে। ফলে অর্থনীতিতে ওই বাড়তি নগদের জোগান সম্ভব হবে। ত্রাণ প্যাকেজের অঙ্গ হিসেবেই এই ব্যবস্থা নিল তারা।
|
যেমন খুশি কর নয়, স্পষ্ট বার্তা মনমোহনের |
কর নিয়ে ‘খেয়ালখুশি মতো’ সিদ্ধান্ত নেবে না তাঁর সরকার। ভোডাফোনের উপরে কর বসানো নিয়ে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির উদ্বেগের মধ্যেই আজ স্পষ্ট ভাষায় এ কথা জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। যে মন্তব্যকে বিদেশি লগ্নিকারীদের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে আরও এক ধাপ বলেই মনে করা হচ্ছে। ভোডাফোনকে নোটিস পাঠানো স্থগিত রেখেছে সরকার। কর ফাঁকি সংক্রান্ত সাধারণ বিধি (জিএএআর) নিয়েও সাবধানী পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আজ একটি ইংরেজি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনমোহন বলেন, “আমরা বিশ্বকে জানাতে চাই যে, ভারত সকলকে সমান এবং যুক্তিসঙ্গত দৃষ্টিতে দেখে। আমরা খেয়ালখুশি মতো কারওর উপরে কর চাপাবো না।” সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়ে দেশে মন্দার বাতাবরণ কাটাতে উদ্যোগী হন প্রধানমন্ত্রী। লগ্নিকারীদের আস্থা ফেরাতে এক দিকে যেমন তিনি আর্থিক সংস্কার প্রক্রিয়া ফের শুরু করতে চান, তেমনই কর নিয়ে তাদের উদ্বেগ দূর করতে চাইছেন।
|
ডলারে টাকার দাম বৃহস্পতিবার পড়ল আরও ৪৮ পয়সা। বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলার দাঁড়ায় ৫৪.৯৭ টাকা। শেয়ার বাজারে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির ভাল লগ্নি সত্ত্বেও তেল আমদানিকারীদের ডলারের চাহিদা ছিল বিপুল। তবে এই নিয়ে টানা ৩ দিন বেড়ে সেনসেক্স বন্ধ হয়েছে ১৭,৫৩৮.৬৭ অঙ্কে। আগের দিনের থেকে ৭৬ পয়েন্ট বেশি ও গত ৩ মাসে সর্বোচ্চ। |