বেহাল সেতুতে নিত্য যানজট বাঁকুড়া মোড়ে
সেতুর মুখেই নিষেধাজ্ঞার বোর্ড, দশ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। দুর্গাপুর-বাঁকুড়া রোডে ডিভিসি-র বর্ধমান সেচখালের সেতুর কাছে গেলে অবশ্য চোখে পড়ে, দিব্যি যাতায়াত করছে ভারি মালবোঝাই সব গাড়ি। দিন বা রাত, সব সময়েই এক চিত্র। ভগ্নপ্রায় সেতুর রেলিং। রাস্তার অংশবিশেষ উঠে যাওয়ায় সমস্যায় পড়ে যানবাহন। যানজট নিত্য চিত্র এই সেতুতে।
পঞ্চাশের দশকে যখন এই সেতুটি সেচ দফতর তৈরি করে, তখন অবশ্য এই রাস্তা এখনকার মতো গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তা ছাড়া, তখন গাড়ির সংখ্যাও ছিল কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই রাস্তা শুধু বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলা নয়, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম সংযোগকারী রাস্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত কয়েক বছরে গাড়ি, বাসের সংখ্যা বেড়েছে হু হু করে। শিল্পায়নের সুবাদে দামোদরের দুই পাড়ে বড়জোড়া ও দুর্গাপুরে বহু কারখানা গড়ে উঠেছে। সেই সমস্ত কারখানায় মাল আনা-নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত সব ভারি লরি চলাচল করে এই রাস্তা দিয়েই। ফলে সেতুটির উপরে চাপ বেড়ে গিয়েছে অত্যাধিক। ফলে পুরনো এই সেতুটি বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই সেতুটির রেলিংয়ের ভাঙাচোরা দশা। কংক্রিটের মেঝে ক্ষয়ে গিয়েছে। তাতে নতুন করে তাপ্পি দেওয়া হয়েছে বহু বার। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই তা ফিরে যায় আগের অবস্থায়। এ ছাড়া সেতুটি বসে গিয়ে দু’পাশের সংযোগকারী রাস্তা থেকে বেশ কিছুটা নীচে নেমে গিয়েছে। ফলে সেতুতে ওঠা বা নামার আগে যানবাহনের গতি বেড়ে যায়। তার উপরে সেতুতে রয়েছে বহু খানাখন্দ। তাতে জল জমে বিপত্তি বাড়ে বর্ষায়। বিশেষত সাইকেল, রিক্সা বা ছোট গাড়ি আটকে যায়। যানজট তৈরি হয়।
এই সেতু দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাঁকুড়া যাতায়াত করেন ডিপিএল কলোনির বাসিন্দা উমাপ্রসাদ দত্ত ও দেবল বর্মা। তাঁরা জানান, সেতুতে গাড়ি উঠলেই আশঙ্কায় থাকেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, “এখন তো পরিস্থিতি আরও জটিল। সেতুতে ওঠার পরে যানজটে কাটিয়ে কখন যে ওপাশে পৌঁছব তার, নিশ্চয়তা নেই। বিশেষ করে দিনের ব্যস্ত সময়ে ওই রাস্তায় গাড়ি বা যানবাহনের সংখ্যা যে ভাবে বেড়ে যায় তাতে যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।”
সেতুটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে সেচ দফতরের ‘দামোদর হেড ওয়ার্কস ডিভিশন’। সেতুটির বেহাল দশার জন্য কয়েক বছর আগেই তারা দশ টনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মাঝে-মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণের কিছু কাজও হয়। কিন্তু তা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন নিয়মিত এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করা মানুষজন। এই সেতুর বদলে নতুন সেতুর দাবিও তুলেছেন তাঁরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক আয়েষা রানি। তিনি বলেন, “সেচ দফতরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। সেতুর সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হবে।” তার পরে প্রয়োজন মতো পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস তাঁর। সেতু সংস্কারের ব্যাপারে প্রশাসনিক আশ্বাস অবশ্য এর আগেও শুনেছেন বাসিন্দারা। কিন্তু কাজের কাজ বিশেষ হয়নি। তাই আশ্বাসের কথা শুনে তাঁদের প্রতিক্রিয়া, না আঁচালে বিশ্বাস নেই।
ছবি: বিকাশ মশান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.