তাঁর সিপিএম সংস্রব ‘এড়িয়ে চলা’র নীতি এ বার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
সোমবার খাদ্যবাজেটের জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “আগেও বলেছি, সিপিএমের সঙ্গে মিশবেন না। এখনও বলছি, ৩৪ বছরে যারা আমাদের ৫৫ হাজার কর্মী খুন করেছে তাদের সঙ্গে মিশবেন না, বসবেন না, কথা বলবেন না। যারা শাসনের মজিদ মাস্টারের জন্ম দিয়েছে, তাদের সঙ্গে মিশব না, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
জ্যোতিপ্রিয়র সিপিএম-বিরোধী এই ‘ফতোয়া’ অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন সভা, দলীয় সম্মেলনে প্রকাশ্যে তিনি এ কথা বলেছেন। এ দিন বিধানসভায় বিষয়টি তুলে তাঁর এই ফতোয়া-নীতি সরকারি ভাবে ‘নথিভুক্ত’ করে রাখলেন। ধারাবাহিক ভাবে তাঁর এই সিপিএম ‘অসূয়া’র পুনরাবৃত্তি এবং বিধানসভায় তা তুলে আনার পিছনে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচ্ছন্ন ‘প্রশ্রয়’ রয়েছে বলেই রাজনৈতিক শিবিরের অভিমত। তিনি যে তাঁর সিপিএম বিরোধিতা অব্যাহতই রাখবেন, তা বোঝাতে সভার বাইরেও জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “এ কথা আমি আগেও বলেছি। এখনও বলছি। আগামী দিনেও বলব।” তবে তাঁর কাছে সিপিএমের সকলেই ‘খারাপ’ নন। আগের মতোই জ্যোতিপ্রিয় বলেছেন, “সিপিএমেও অনেক ভাল লোক আছেন। যাঁরা আমাদের ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। আমি বোঝাতে চেয়েছি মজিদ মাস্টারের মতো হাজার হাজার খুনিকে। তাদের এড়িয়ে চলতেই হবে।”
সিপিএমের ‘ছোঁয়াচ’ এড়িয়ে চলার ফতোয়ার পাশাপাশি খাদ্য দফতরের কাজ সুষ্ঠু ভাবে চালাতে শাসক-বিরোধী সব বিধায়কদের কাছেই সহযোগিতার আর্জি জানান খাদ্যমন্ত্রী। ধান তুলতে বিভিন্ন বিধায়কের এলাকায় এলাকায় শিবির করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। কিন্তু সভায় তাঁর অভিযোগ, “বাম বিধায়কদেরও প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে, ফোন-এসএমএস করে অনুরোধ করেছি। কিন্তু অধিকাংশ বাম বিধায়কই জবাব দেননি। সকলে সহযোগিতা না-করলে কাজ চালানো মুশকিল।” ফরমানের পিঠোপিঠি জ্যোতিপ্রিয়রই এমন সহযোগিতার দরবারে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এক বাম বিধায়কের মন্তব্য, “দেশে অস্পৃশ্যতা-বিরোধী একটা আইন রয়েছে। উনি জানেন তো?” |