সিপিএমের লোকাল কমিটি কার্যালয় থেকে উদ্ধার হল অস্ত্র। সোমবার পাত্রসায়র থানার জামকুড়ি গ্রামে এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়।
এ দিন সকালে তৃণমূল হবপুকুর থেকে জামকুড়ি পর্যন্ত একটি বড় মিছিল করে। পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “মিছিলে ১০ হাজারের বেশি মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। জামকুড়ি গ্রামে সিপিএমের পার্টি অফিসের পাশ দিয়ে যখন আমাদের মিছিল যাচ্ছিল, তখন ওই অফিস থেকে আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কটূক্তি করা হয়। অফিসের ছাদ থেকে বন্দুকও দেখায় কয়েক জন।” |
এর পরেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা ওই পার্টি অফিস ঘিরে ফেলে দাবি করেন, ওই পার্টি অফিসে অস্ত্রশস্ত্র মজুত রয়েছে। পুলিশকে তা উদ্ধার করতে হবে। খবর পেয়ে এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) এ রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি মেনে পুলিশ ওই অফিসের ভিতরে তল্লাশি চালায়। শৌচাগারের পাশ থেকে একটি পিস্তল, ৪টি কার্তুজ, বোমা ও হাতকামান উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। পার্টি অফিসের ভিতরে থাকা সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক-সহ ৭৮ জনকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। যদিও গোটা ঘটনাকে ‘তৃণমূলের পরিকল্পিত নাটক’ বলে দাবি করেছে সিপিএম। পরে তাঁদের মধ্যে পাত্রসায়র দক্ষিণ লোকাল কমিটির সম্পাদক প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়-সহ ১৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ জামকুড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিস ঘিরে রেখেছেন তৃণমূলের কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর), বিষ্ণুপুরের আইসি প্রবীর মুখোপাধ্যায়, ইন্দাসের ওসি তাপস দত্ত বিশাল বাহিনী নিয়ে ব্যারিকেড করে রেখেছেন। উত্তেজিত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা সিপিএম নেতাদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। পার্টি অফিসের ভিতর থেকে সিপিএমের প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়, লোকাল কমিটির সদস্য মহানন্দ পাঁজা-সহ দলীয় কর্মীদের বের করে গাড়িতে তুলছে পুলিশ। এলাকার অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। দুপুর ১টা নাগাদ পুলিশ পার্টি অফিসের পাশের পুকুরে জাল ফেলে অস্ত্রের খোঁজে। যদিও কিছু মেলেনি।
সিপিএমের পাত্রসায়র জোনাল সম্পাদক লালমোহন গোস্বামীর দাবি, “গত শুক্রবার রাতে বাঁকিশোল মোড়ে তৃণমূলের যে লোকজন আমাদের মারধর করেছিল, এ দিন তারাই পরিকল্পনা করে পার্টি অফিস আক্রমণের চেষ্টা করে। আমাদের পার্টি অফিস থেকে কোনও অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। পুলিশের সামনে অস্ত্র উদ্ধারের নামে পুরোটাই তৃণমূলের নাটক।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “আমাদের সমর্থক তেলিসায়ের গ্রামের এক যুবককে তৃণমূলের লোকেরাই প্রথম তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে। এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করার জন্যই এ সব করছে তৃণমূল।” |