|
|
|
|
২৫ ফুট কুয়োয় পড়েও রক্ষা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গুড়গাঁওয়ের ছোট্ট মাহিকে বাঁচানো যায়নি। বাঁচানো যায়নি হাওড়ার কিশোর রোশনকেও। কিন্তু গ্রামবাসীদের চেষ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির শেখ শওকত আলিকে কিন্তু বাঁচানো গেল। গত শুক্রবার থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। সোমবার সকালে ২৫ ফুট গভীর পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। কুয়োয় দড়ি ফেলে দিলে তিনি তা ধরে কোনওক্রমে উপরে উঠেছেন।
শালবনি থানার পিরাকাটার পাথরি গ্রামের বাসিন্দা বছর ছাপান্নর শওকত এখন মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। কথা বলার সাধ্য নেই। পেশায় রাঁধুনি শওকত কয়েক মাস হল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরেই কাজ করছিলেন। গত বুধবার গ্রামে গিয়েছিলেন। শুক্রবার ভোরে আবার কর্মস্থলে যান। তারপর থেকেই তাঁর আর খোঁজ ছিল না। শনি-রবি দু’দিন শওকতের খোঁজ করেও পাননি স্ত্রী ও দুই ছেলে। ঠিক ছিল সোমবার সকালে শালবনি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হবে। এর মধ্যেই উদ্ধার হন শওকত। |
|
হাসপাতালে ভর্তি শওকত। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ |
গ্রামবাসীরাই জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধের মুখে স্থানীয় কয়েকজন জঙ্গল ঘেঁষা ওই কুয়োটি থেকে চিৎকার শুনতে পান। অন্ধকার হয়ে আসায় তাঁরা অবশ্য তখন আর কাছে যাননি। সকালে গ্রামবাসীরা গিয়ে দেখেন, মাঝবয়সী এক জন কুয়োয় পড়ে রয়েছেন। তাঁরাই দড়ির ব্যবস্থা করে তাঁকে উদ্ধার করেন। উদ্ধার কাজে হাত লাগানো ঝুন মাহাতো, রাজকুমার দাস, বিপিন সরেন, চুনা মাহাতো সকলেরই বাড়ি ভাদুতলায়। তারপরে শওকতের নোটবুক থেকে তাঁর বড় ছেলে সৈরতের ফোন নম্বর পেয়ে তাঁকে ফোন করেন। তারপরেই শওকতের পরিচয় জানা যায়। শওকতের স্ত্রী সাবিরন বলেন, “সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন আমার স্বামী। ওই কুয়োয় জল না থাকলেও সাপখোপ ঢুকতে পারত। খাবারও ছিল না। যাঁরা তাঁর প্রাণ বাঁচিয়েছেন, তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।” কিন্তু কী ভাবে কুয়োয় পড়লেন শওকত? সৈরত বলেন, “বাবা স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে পারছেন না। যেটুকু বুঝেছি, মেদিনীপুর ফেরার পথে ওঁকে কেউ মিষ্টি খাইয়ে বেঁহুশ করে দেয়। তারপর মারধর করে কুয়োয় ফেলে দেয়।” তবে শওকতের টাকা পয়সা খোওয়া গিয়েছে কি না, তা সৈরত জানাতে পারেননি। কিন্তু কারা এ কাজ করল? সৈরতের কথায়, “কারা, কেন এমন করল, তা বুঝতে পারছি না।” জেলা পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “ওঁর পরিবারের তরফে অভিযোগ জানালে আমরা তদন্ত করব।” |
|
|
|
|
|