রেজ্জাকের সিঙ্গুর-যাত্রায় নিষেধ আলিমুদ্দিনের
প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রী তথা বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাকে আজ, মঙ্গলবার সিঙ্গুর অভিযানে যেতে সরাসরি নিষেধ করে দিল তাঁর দল সিপিএম।
তবে দীর্ঘ দিন ধরেই রেজ্জাক দলে ‘বিদ্রোহী’। দলের নিষেধ উপেক্ষা করেই তিনি আজ সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সঙ্গে সিঙ্গুরে গিয়ে ফের ‘বিদ্রোহ’ দেখাবেন কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে কৌতূহল রয়েছে।
সিঙ্গুর অভিযানে না-যেতে রেজ্জাককে নির্দেশ দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। তিনি যেমন রেজ্জাককে চিঠি পাঠিয়েছেন, তেমনই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম নেতৃত্বও ক্যানিংয়ের বিধায়কের অভিযানে সমর্থন দিতে নারাজ। এমনকী, বরাবর যে নিচু তলার কর্মীদের নিয়ে তিনি আন্দোলনের পুরো ভাগে থেকেছেন, তাঁরাও তাঁর সিঙ্গুর-যাত্রায় পাশে না-থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই তিনি কিঞ্চিৎ ‘দোটানা’য় পড়েছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে সোমবার জানান প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রী রেজ্জাক।
দলের রাজ্য সম্পাদক বিমানবাবু, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী ও বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র আলাদা আলাদা ভাবে রেজ্জাকের সঙ্গে সিঙ্গুর বিষয়ে কথা বলেছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে রেজ্জাক এ দিন বলেন, তিনি ‘একেশ্বরবাদী’! দলে বিমানবাবু ছাড়া কে কী বলল, তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না! সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, “ওঁর ঈশ্বর বিমানবাবুই ওঁকে যেতে বারণ করেছেন। কৃষক সভাও ওই কর্মসূচি সমর্থন করেনি। এর পরে গেলে নিজ দায়িত্বে যাবেন।” রেজ্জাক যান বা না-যান, তাদের পূর্বনির্ধারিত অভিযান বাতিল করেনি লিবারেশন। চাষিদের জমি ফেরানোর দাবিতে সিঙ্গুরে মিছিল-সভা করার কথা রয়েছে লিবারেশনের। দলের একটি সূত্রের ইঙ্গিত, কারখানার পাঁচিল ভেঙে ‘জমি পুনর্দখল অভিযানে’ নামতে পারে লিবারেশন। দলের রাজ্য নেতা সজল অধিকারীও বলেন, “জোর করে চাষিদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন সেই জমি পুনর্দখল করায় অন্যায় নেই। এটা চাষিদের নৈতিক অধিকার।” সজলবাবুর মন্তব্য, “ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ চাষিদের বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা হিসেবে গত সাত বছরে ৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। মাসে ৭ হাজার টাকা করে সব চাষিকে (‘ইচ্ছুক’-‘অনিচ্ছুক’) ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আন্দোলনকারীদের উপর থেকে মামলা তুলতে হবে।”
এরই মধ্যে এ দিন সিঙ্গুরের পরিস্থিতি বুঝতে সেখানকার কার্যালয়ে বৈঠক করেন সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার। দু’জন ‘অনিচ্ছুক’ চাষির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে তিনি বলেন, “এখানে কিছুই হচ্ছে না দেখে হতাশ সবাই। তবে দু’হাজার টাকা ভাতা ও দু’কিলো করে চাল নিতেই ‘ইচ্ছুক’-‘অনিচ্ছুক’ চাষিরা আগ্রহী।” তাঁর পরামর্শ, “রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সব দল, ‘ইচ্ছুক’-‘অনিচ্ছুক’ কৃষক ও টাটা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে সুরাহা হলেও হতে পারে।” সিঙ্গুর নিয়ে তাঁর মতামত রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে জানাবেন মঞ্জুবাবু। সিঙ্গুর নিয়ে সিপিএম এখনই আন্দোলনে না নামলেও দলের হুগলি জেলার কৃষক সভার নেতা শ্রীকান্ত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “তৃণমূল জমি-জট আরও পাকিয়েছে। নকশালরা ঢুকছে। এ বার মাওবাদীরাও ঢুকবে!” বেচারাম মান্নার মন্তব্য, “সিঙ্গুরের চাষিরা বোকা নন। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাঁরা এখানে পৌঁছেছেন। অনর্থক মানুষকে খেপানোর চেষ্টা করে, সিঙ্গুরে ফল হবে না!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.