সরকারি কাজের পরিসংখ্যানে ত্রুটি
০০ দিনের কাজের প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ‘ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ (এমআইএস)। নিয়ম হল, এই ব্যবস্থায় কোনও গ্রাম পঞ্চায়েত তার এলাকায় প্রকল্পটিতে যা কাজ হয়েছে তার খুঁটিনাটি বিষয় কম্পিউটারে তুলে রাখা হবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে তা দেশের যে কোনও জায়গা থেকে দেখা যাবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই কাজের অগ্রগতি দেখে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতর প্রকল্পটিতে পরবর্তী বরাদ্দ দেবে। অথচ এই ‘ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’- এ বড়সড় ত্রুটি ধরা পড়েছে হাওড়ার শ্যামপুর ২ ব্লকের বাছরি এবং আমড়দহ এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। যে সব জবকার্ডধারীরা কাজই করেননি তাঁরাও কাজ করেছেন এবং টাকা পেয়েছেন বলে তৃণমূল পরিচালিত এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কম্পিউটারে দেখানো হয়েছিল। ত্রুটির কথা লিখিত ভাবে স্বীকার করেছে ব্লক প্রশাসন। দু’টি পঞ্চায়েতের এমআইএস ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের ‘সতর্ক’ করেছে ব্লক প্রশাসন।
বাছরি গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁপাবাড় গ্রামে বাসিন্দা আব্দুল লতিব খান এবং কুতুবুদ্দিন খান বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছিলেন, তাঁরা কাজই করেননি। অথচ ইন্টারনেটে দেখানো হয়েছে তাঁরা কাজ করেছেন। এর জন্য তাঁরা টাকাও পেয়েছেন। অভিযোগটি পেয়েই তাঁর নিজের দফতরে গত ২৯ মে বিডিও গোবিন্দ হালদার শুনানির আয়োজন করেন। তাতে ডাকা হয় বাছরি পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েতের পদস্থ আধিকারিক ও কর্মী এবং যেখান থেকে জবকার্ডধারীদের মজুরি দেওয়া হয় সেই কুলটিকরি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির আধিকারিকদের।
শুনানিতে পঞ্চায়েত এবং কুলটিকরি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, লতিব এবং কুতুবুদ্দিন কাজ করেননি। তাঁদের কোনও মজুরিও দেওয়া হয়নি। অথচ লতিব এবং কুতুবুদ্দিনের নাম ‘ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম’ ব্যবহার করে কম্পিউটারে তোলা হয়েছিল। শুনানিতে এটিকে ‘ভুল হয়েছে’ বলে উল্লেখ করা হয়।
একই ঘটনা ঘটে আমড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের পিপুল্যান গ্রামের বাসিন্দা দীপক পাঁজা এবং স্মৃতিকণ্ঠ কোলেও অভিযোগ করেন, তাঁরা কাজ করেননি। অথচ ইন্টারনেটে তাঁদের নামের পাশে দেখানো হয়েছে তাঁরা কাজ করেছেন এবং মজুরি পেয়েছেন। ২৯ মে শুনানিতে ডাকা হয় আমড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েতের সব আধিকারিক ও কর্মী এবং স্টেট ব্যাঙ্কের সীতাপুর শাখার আধিকারিকদের। এই গ্রাম পঞ্চায়েতেরও কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা যায় বাস্তবে ওই দুই গ্রামবাসী কাজ করেননি অথচ তাঁদের নাম উঠে গিয়েছে ওয়েবসাইটে। এটিকেও ‘ভুল হয়েছে’ বলে উল্লেখ করা হয় শুনানিতে।
বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আতিয়ার খান বলেন, “এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের শুধু চার জন গ্রামবাসী নন, আমরা ইন্টারনেট খুলে দেখেছি বহু মানুষের নাম কম্পিউটারে তোলা হয়েছে প্রকৃত অর্থে যাঁরা কাজই করেননি, এবং টাকাও পাননি। মৃত মানুষের নামও মজুরি প্রাপকদের তালিকায় রয়েছে। অথচ ইন্টারনেটেই দেখেই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের অগ্রগতি যাচাই করা হয় দেশ জুড়ে। এই ভাবে ভুল তথ্য দেওয়া হলে তো প্রকল্পটির প্রকৃত অগ্রগতি নিয়ে দেশজুড়ে বিভ্রান্তি দেখা দেবে। এই বিষয়টি জানিয়ে আমরা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন দফতরে চিঠি লিখব।”
বাছরি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যাম মেটিয়া এবং আমড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপা জানা বলেন, “কম্পিউটার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আমাদের আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।” অন্য দিকে, বিডিও গোবিন্দ হালদারও বলেন, “এ বিষয়ে আরও সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে।” ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের এমআইএস ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কম্পিউটার কর্মীদের কড়া ভাষায় সতর্ক করার পাশাপাশি সাফ জানানো হয়েছে ভবিষ্যতে এমন ভুল হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.