ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রী বদলের ‘আশ্বাস’ দিয়ে কর্নাটকে আপাতত সঙ্কট কাটানোর চেষ্টা করলেন বিজেপি নেতৃত্ব। এই প্রতিশ্রুতির পর ইয়েদুরাপ্পা-ঘনিষ্ঠ নয় মন্ত্রী তাঁদের ইস্তফাও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সদানন্দ গৌড়াকে সরিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ লিঙ্গায়েত নেতা জগদীশ সেত্তারকে সেই পদে বসাতে আগ্রহী ইয়েদুরাপ্পা। নিতিন গডকড়ী, অরুণ জেটলিরা ইয়েদুরাপ্পাকে আশ্বাস দেন, কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রী বদল হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করুন। আর ন’জন মন্ত্রী তাঁদের ইস্তফা প্রত্যাহার করে নিন। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে মন্ত্রীরা ইস্তফা প্রত্যাহার করলেও বিজেপি নেতৃত্বের অনেকেই মনে করছেন, বারবার এ ভাবে ইয়েদুরাপ্পার চাপের কাছে নতিস্বীকার ভালো লক্ষণ নয়। ফলে যেটুকু সময় তাঁর থেকে চেয়ে নেওয়া হয়েছে, তারপর ফের যদি ইয়েদুরাপ্পার বিদ্রোহ শুরু হয়, তা হলে মুখ্যমন্ত্রী বদলের থেকে সরাসরি ভোটে চলে যাওয়াই ভালো।
বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আশঙ্কা, কর্নাটকে এই অস্থিরতার মধ্যে সরকার ফেলে দিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়বে কংগ্রেস এবং জেডিএস জোট। তাই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যেও কাল, মঙ্গলবার বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে দলের এক শীর্ষ নেতার মতে, মুখ্যমন্ত্রী বদল হলেই সব সমস্যা মিটবে, তা নয়। ২২৫ সদস্যের কর্নাটক বিধানসভায় শাসক বিজেপির বিধায়কসংখ্যা ১২০। গৌড়ার পিছনে আছে প্রায় ৫০ জনের সমর্থন। ইতিমধ্যেই তাঁরা হুমকি দিয়েছেন, ইয়েদুরাপ্পা ঘনিষ্ঠ কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে, তাঁরা ইস্তফা দেবেন। তাই অঙ্কের হিসেবে পরিষ্কার, গৌড়াকে সরিয়ে সরকার গড়লেও সেই সরকার খুব স্বস্তিতে থাকবে না। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডে ভোটের ঠিক আগে নিশাঙ্ককে সরিয়ে ভুবনচন্দ্র খান্ডুরিকে মুখ্যমন্ত্রী করানো হয়। কিন্তু ভোটে নিশাঙ্কের কোপ থেকে রেহাই পাননি খান্ডুরি। ভোটে তিনি নিজে তো হেরেই যান, বিজেপিও আর ক্ষমতায় আসতে পারেনি। সদানন্দ গৌড়াকে সরানো হলে ভোটে তাঁর অনুগামীরাও বিজেপির বিপক্ষে বিধানসভা নির্বাচনে কাজ করতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে দলের একাংশ মনে করছে, রাষ্ট্রপতি ভোটের বাহানায় কিছুটা সময় নিয়ে এ বছরের শেষেই ভোট হোক। এমনিতেই আর এক বছরের মাথায় রাজ্যে নির্বাচন। তার ছ’মাস আগে ভোট হলে এমন কিছু এসে যায় না।
এ দিন দিল্লি পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী গৌড়া জানান, দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছেন। সোমবার রাতেই লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং অন্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বদলের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ৫ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা-ঘনিষ্ঠ বিক্ষুব্ধ বিধায়করা। |